১ ওয়াক্ত নামাজ না পড়ার ১৫ টি শাস্তি কোরআন এ সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানুন
নামাজ না পড়ার ১৫ টি শাস্তি ও ইচ্ছাকৃত
নামাজ না পড়ার শাস্তি কি এ সম্পর্কে বিভিন্ন বিষয় জানতে আর্টিকেলটি
বিস্তারিত পড়ুন।
![]() |
|
নামাজ না পড়ার শাস্তি কোরআন |
১ ওয়াক্ত নামাজ না পড়ার ১৫ টি শাস্তি কোরআন জানার পাশাপাশি মৃত্যুর পর নামাজ না পড়ার শাস্তি জানতে পারবেন আর্টিকেলটিতে।
সূচীপত্র ঃ নামাজ না পড়ার শাস্তি কোরআন
নামাজ না পড়ার শাস্তি কোরআন
নামাজ না পড়ার শাস্তি সম্পর্কে কুরআনে ও হাদীসে কঠোরভাবে সতর্ক করা হয়েছে।
কুরআনে বিভিন্ন স্থানে নামাজ না পড়ার পরিণতি এবং অবহেলার শাস্তি বর্ণিত হয়েছে।
নিচে কিছু আয়াত তুলে ধরা হলো:
কুরআনের আয়াতসমূহ:
১. সূরা আল-মা'ঊন (107:4-5):
فَوَيْلٌ لِّلْمُصَلِّينَ (٤) الَّذِينَ هُمْ عَن صَلَاتِهِمْ سَاهُونَ (٥)
"অতএব দুর্ভোগ সেসব নামাজীদের জন্য, যারা তাদের নামাজে গাফিল।"
ব্যাখ্যা: এই আয়াতে গাফিল মানে যারা ইচ্ছাকৃতভাবে নামাজ বিলম্ব করে বা
গুরুত্ব দেয় না। এতে বোঝানো হয়েছে যে নামাজ অবহেলা করলে শাস্তি হবে।
২. সূরা মারইয়াম (19:59):
فَخَلَفَ مِنۢ بَعْدِهِمْ خَلْفٌ أَضَاعُوا۟ ٱلصَّلَوٰةَ وَٱتَّبَعُوا۟
ٱلشَّهَوَٰتِ فَسَوْفَ يَلْقَوْنَ غَيًّا
"অতঃপর তাদের পরে এক দল উত্তরসূরি এলো, যারা নামাজ ত্যাগ করল এবং খেয়াল-খুশির
অনুসরণ করল; সুতরাং তারা অচিরেই গোমরাহির (বিপদজনক শাস্তি) সম্মুখীন হবে।"
ব্যাখ্যা: যারা নামাজ ছেড়ে দেয়, তাদের জন্য 'গাইয়্য' নামক ভয়ানক শাস্তির
কথা বলা হয়েছে, যা জাহান্নামের এক উপত্যকা বলে হাদীসে উল্লেখ আছে।
৩. সূরা তাওবা (9:11):
فَإِن تَابُوا۟ وَأَقَامُوا۟ ٱلصَّلَوٰةَ وَءَاتَوُا۟ ٱلزَّكَوٰةَ
فَإِخْوَٰنُكُمْ فِى ٱلدِّينِ...
"যদি তারা তাওবা করে, নামাজ কায়েম করে এবং যাকাত দেয়, তাহলে তারা তোমাদের দ্বীনের
ভাই।"
ব্যাখ্যা: এখানে বোঝানো হয়েছে, ইসলামের মৌলিক শর্তের মধ্যে নামাজ অন্যতম।
নামাজ না পড়া ইসলাম থেকে বিচ্যুতির লক্ষণ হতে পারে।
হাদীস থেকে কিছু কথা:
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন:
"আমাদের ও কাফিরদের মধ্যে পার্থক্যকারী বিষয় হলো নামাজ। তাই যে নামাজ
ত্যাগ করল, সে কুফর করল।"
(তিরমিযী, আবু দাউদ)
সারসংক্ষেপ:
নামাজ না পড়া শুধু গোনাহ নয়, বরং ইসলামের অন্যতম স্তম্ভকে অস্বীকার করার শামিল
হতে পারে।
কুরআনে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, যারা নামাজ অবহেলা করবে তারা শাস্তি পাবে।
হাদীসে নামাজ ত্যাগকারীকে ‘কাফিরের’ সন্নিকটে বলা হয়েছে।
যদি আপনি চান, আমি এসব আয়াত ও হাদীস বাংলা অনুবাদ ও তাফসিরসহ সুন্দরভাবে সাজিয়ে
দিতে পারি—নামাজের গুরুত্ব বা কাউকে বোঝাতে হলে।
নামাজ না পড়ার শাস্তি কোরআন এর আলোকে জানালাম আপনাদের।
নামাজ না পড়ার ১৫ টি শাস্তি
নামাজ না পড়ার বিষয়ে ইসলাম ধর্মে কঠোরভাবে সতর্ক করা হয়েছে। হাদীস ও ইসলামিক
গ্রন্থসমূহে উল্লেখ রয়েছে যে, যারা ইচ্ছাকৃতভাবে নামাজ ছেড়ে দেয়, তাদের জন্য
রয়েছে পার্থিব ও পরকালীন শাস্তি।
নিচে নামাজ না পড়ার ১৫টি শাস্তি তুলে ধরা হলো, যেগুলো কুরআন, হাদীস এবং
আলেমদের ব্যাখ্যার আলোকে সংকলিত:
দুনিয়াতে ৬টি শাস্তি (নামাজ না পড়ার কারণে)
১. আয়ু থেকে বরকত উঠে যায়
২. চেহারা থেকে নূর (আলোকিততা) চলে যায়
৩. রিজিকে সংকীর্ণতা আসে
৪. দুনিয়ার শান্তি হারিয়ে যায়, অন্তরে অস্থিরতা জন্মে
৫. সৎকর্মে অনীহা ও আল্লাহর ইবাদতে অলসতা সৃষ্টি হয়
৬. মানুষের মাঝে সম্মান হারিয়ে ফেলে
মৃত্যুর সময় ৩টি শাস্তি
৭. কঠিন ও কষ্টদায়ক মৃত্যু হবে
৮. মৃত্যুকালে ঈমান ছাড়া মৃত্যু হতে পারে (না'উজুবিল্লাহ)
৯. মৃত্যুর সময় পিপাসায় কষ্ট পাবে, কেউ পানি দিতে পারবে না
কবরের মধ্যে ৩টি শাস্তি
১০. কবর অন্ধকারে ভরে যাবে, কবর চাপ দেবে
১১. কবর তাকে আগুনে পোড়াবে ও সাপ-বিচ্ছু দংশন করবে
১২. ফেরেশতারা কঠিনভাবে আযাব দেবে, শান্তি থাকবে না
কিয়ামতের দিন ৩টি শাস্তি
১৩. হাশরের ময়দানে আল্লাহর রহমত থেকে বঞ্চিত হবে
১৪. চেহারা কালো হবে ও কেয়ামতের দিনে সবার সামনে অপমানিত হবে
১৫. জাহান্নামের কঠিন আযাব ভোগ করতে হবে — বিশেষত “গাইয়্য” নামক একটি উপত্যকায়
নিক্ষিপ্ত হবে (সূরা মারইয়াম ১৯:৫৯ অনুসারে)
হাদীস থেকে আরও ব্যাখ্যা:
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন:
"যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে নামাজ ছেড়ে দেয়, তার সঙ্গে ইসলামের কোনো
সম্পর্ক নেই।"
(মুসনাদে আহমদ)
আরেক হাদীসে এসেছে:
"নামাজ পরিত্যাগ করা কুফরির কাছাকাছি কাজ।"
(তিরমিযী)
নামাজ ইসলামের মূল স্তম্ভ। ইচ্ছাকৃতভাবে নামাজ ছেড়ে দিলে পার্থিব জীবনেও কষ্ট
পেতে হয়, এবং মৃত্যুর পর আরও কঠিন শাস্তি অপেক্ষা করে। এসব শাস্তি থেকে বাঁচার
একমাত্র উপায় হলো — নিয়মিত নামাজ আদায় করা এবং আল্লাহর কাছে তাওবা করা।
নামাজ না পড়ার ১৫ টি শাস্তি জেনে নিয়েছেন এইবার ইচ্ছে করে নামাজ না পড়লে তার শাস্তি জেনে নিন।
ইচ্ছাকৃত নামাজ না পড়ার শাস্তি কি
ইচ্ছাকৃতভাবে নামাজ না পড়ার শাস্তি ইসলামে অত্যন্ত ভয়ানক এবং তা কুরআন ও
হাদীসের আলোকে স্পষ্টভাবে বর্ণিত হয়েছে। ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের অন্যতম হলো
নামাজ — এটি ইচ্ছাকৃতভাবে ছেড়ে দেওয়া গুরুতর গুনাহ, এমনকি ইসলামী জ্ঞানের বহু
বিশিষ্ট আলেম একে "কুফরি" বলেও আখ্যায়িত করেছেন।
ইচ্ছাকৃত নামাজ না পড়ার শাস্তি:
১. কুরআনের শাস্তি:
সূরা মারইয়াম (১৯:৫৯)
"অতঃপর তাদের পরে একদল উত্তরসূরি এলো, যারা নামাজ নষ্ট করল এবং
খেয়াল-খুশির অনুসরণ করল; সুতরাং তারা গোমরাহির শাস্তি (গাইয়্য) ভোগ করবে।"
(সূরা মারইয়াম, ১৯:৫৯)
"গাইয়্য" হল জাহান্নামের ভয়ংকর একটি উপত্যকা — হাদীসে বলা হয়েছে, এই
স্থান এত ভয়ংকর যে জাহান্নাম নিজেও আল্লাহর কাছে তার উত্তাপ থেকে আশ্রয়
প্রার্থনা করে।
২. হাদীসের শাস্তি:
রাসুলুল্লাহ (ﷺ) বলেন:
"আমাদের ও কাফেরদের মধ্যে পার্থক্যকারী বিষয় হল নামাজ। সুতরাং যে তা পরিত্যাগ
করে, সে কুফরি করল।"
(তিরমিযী: ২৬২১)
ইচ্ছাকৃতভাবে নামাজ ত্যাগ করলে ঈমান পর্যন্ত হুমকির মুখে পড়ে — এটি কুফরি বলেও
বিবেচিত হতে পারে।
৩. ইবনে কাইয়্যিম (রহ.) বলেন:
"নামাজ না পড়া সমস্ত গুনাহের মধ্যে সবচেয়ে বড়। এমনকি হত্যাকাণ্ড, চুরি,
ব্যভিচার— এসব থেকেও তা ভয়ানক।"
৪. পরকালীন শাস্তি:
নামাজ না পড়লে মৃত্যু সময় ঈমান ছাড়াই মৃত্যু হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
কবর হবে আঁধারে ভরা, চাপে ও শাস্তিতে কষ্টকর।
কিয়ামতের দিন নামাজ না পড়াদের মুখ কালো হবে, অপমানিত হবে।
তারা জাহান্নামে যাবে এবং মহান আল্লাহর রহমত থেকে বঞ্চিত হবে।
তওবার সুযোগ আছে:
যদি কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে নামাজ না পড়ে থাকেন, তাহলে সত্যিকারভাবে অনুতপ্ত হয়ে
তাওবা করলে আল্লাহ তা'আলা ক্ষমা করতে পারেন। কুরআনে আছে:
"বলুন, হে আমার সেই বান্দাগণ, যারা নিজেদের ওপর সীমা অতিক্রম করেছে!
তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না; নিশ্চয়ই আল্লাহ সব গোনাহ ক্ষমা করেন।"
(সূরা আয-যুমার, ৩৯:৫৩)
সংক্ষেপে:
ইচ্ছাকৃতভাবে নামাজ না পড়া =
ইসলামি দৃষ্টিতে সবচেয়ে বড় গুনাহগুলোর একটি।
ঈমান হারানোর ঝুঁকি।
দুনিয়া ও আখিরাতে ভয়ানক শাস্তি।
তওবা করলে আল্লাহ ক্ষমাশীল — তবে অবহেলা করে সময় নষ্ট করা যাবে না।
ইচ্ছাকৃত নামাজ না পড়ার শাস্তি কি জানলেন তাই নিয়মিত নামাজ পড়ুন।
১ ওয়াক্ত নামাজ না পড়ার শাস্তি
একবার ইচ্ছাকৃতভাবে মাত্র ১ ওয়াক্ত নামাজ না পড়ার শাস্তিও ইসলামে অত্যন্ত কঠিন
ও ভয়াবহ বলে বিবেচিত। ইসলাম নামাজকে শুধু একটি ইবাদত নয়, বরং ঈমানের ভিত্তি
হিসেবে গণ্য করে। সুতরাং ইচ্ছাকৃতভাবে একটিও ছেড়ে দেওয়া মানে হলো, আল্লাহর ডাকে
সাড়া না দেওয়া — যা মহান অপরাধ।
১ ওয়াক্ত নামাজ ইচ্ছাকৃতভাবে না পড়ার শাস্তি:
১. সূরা আল-মাঊন (১০৭:৪–৫):
فَوَيْلٌ لِّلْمُصَلِّينَ الَّذِينَ هُمْ عَنْ صَلَاتِهِمْ سَاهُونَ
“অতএব দুর্ভোগ (গভীর শাস্তি) সেসব নামাযীদের জন্য, যারা তাদের নামাযের প্রতি
গাফিল।”
যারা এক ওয়াক্ত বা কিছু সময়ের জন্য ইচ্ছাকৃতভাবে গাফিল থাকে, তাদের জন্য
এই আয়াতে ভয়ানক শাস্তির হুমকি দেওয়া হয়েছে।
২. হাদীস:
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন:
"যে ব্যক্তি একটি ওয়াক্ত নামাজ ইচ্ছাকৃতভাবে ছেড়ে দেয়, সে এমন এক পাপ
করেছে যার কোন কাজ দিয়ে কাফফারা (প্রায়শ্চিত্ত) হয় না।"
(মুসনাদে আহমাদ, বাইহাকী)
অর্থাৎ এই পাপ এত বড় যে তা সাধারণ ভালো কাজ দিয়ে মোচন হয় না, একমাত্র
আন্তরিক তাওবাই একমাত্র উপায়।
৩. ইমাম কুরতুবী (রহ.) বলেন:
“যে ব্যক্তি এক ওয়াক্ত নামাজ ইচ্ছাকৃতভাবে ছেড়ে দেয়, সে এমন এক দরজায়
প্রবেশ করল যা জাহান্নামের দিকে নিয়ে যায়।”
৪. পরিণতি:
অন্তর কালো হতে শুরু করে।
গোনাহ করতে সহজ লাগে, হৃদয়ে ঈমানের প্রভাব কমে যায়।
এক ওয়াক্ত ছেড়ে দিলে দ্বিতীয় ওয়াক্তেরও গুরুত্ব কমে যায় — এভাবে মানুষ ধীরে
ধীরে নামাজহীন হয়ে পড়ে।
কী করবো যদি কোনো ওয়াক্ত নামাজ ছুটে যায়?
১. সাথে সাথে তওবা করতে হবে — আন্তরিকভাবে অনুতপ্ত হয়ে আল্লাহর কাছে ক্ষমা
চাইতে হবে।
২. ছুটে যাওয়া নামাজ কাযা করে নিতে হবে।
৩. নিজেকে আগলে রাখতে হবে যেন ভবিষ্যতে তা আর না হয়।
উপসংহার:
১ ওয়াক্ত নামাজ ইচ্ছাকৃতভাবে ছেড়ে দিলে তা শুধু গোনাহ নয়, বরং ঈমানের ওপর
বড় আঘাত।
প্রতিটি নামাজ সময়মতো পড়া — আল্লাহর কাছে আমাদের দায়িত্ব ও পরীক্ষার অংশ।
যারা নামাজকে গুরুত্ব দেয়, আল্লাহ তাদের রিজিক, সম্মান ও আখিরাতে সফলতা
দেন।
১ ওয়াক্ত নামাজ না পড়ার শাস্তি জানালাম আপনাদের এখন জানুন মারা যাওয়ার পর নামাজ না পড়লে কি শাস্তি হতে পারে।
মৃত্যুর পর নামাজ না পড়ার শাস্তি
মৃত্যুর পর নামাজ না পড়ার শাস্তি কুরআন ও হাদীসের আলোকে অত্যন্ত ভয়াবহ এবং
হৃদয়বিদারক। আল্লাহ তাআলা নামাজকে ঈমানের পর সর্বপ্রথম এবং সবচেয়ে
গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব বানিয়েছেন। তাই ইচ্ছাকৃতভাবে নামাজ না পড়ার ফলাফল মৃত্যু
পরবর্তী জীবন—কবর ও আখিরাতে—চরম শাস্তির কারণ হয়।
মৃত্যুর পর নামাজ না পড়ার ৫টি ভয়ানক শাস্তি:
১. কবরের শাস্তি:
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন:
"নামাজ ছেড়ে দেওয়ার কারণে একজনের কবর তাকে এমনভাবে চাপ দেবে যে তার
পাঁজরের হাড় একে অপরের ভেতরে ঢুকে যাবে।"
(তাবারানী, হাদীস সহিহ)
যারা নামাজ ছেড়ে দেয়, তাদের কবর অন্ধকার, ভয়ানক ও চাপদায়ী হয়। ফেরেশতা
মারতে থাকেন, আগুন জ্বলে।
২. কবরে সাপ-বিচ্ছুর আযাব:
হাদীসে এসেছে:
"যে নামাজ পড়ত না, তার কবরের মধ্যে একটি বিশাল সাপ থাকবে, যার নাম ‘শুজা
উল-আকরা’। তা তাকে কেয়ামত পর্যন্ত কামড়ে ও ছোবল মেরে শাস্তি দেবে।"
(মিশকাতুল মাসাবীহ)
এই সাপ দিনে ৫ বার কামড়াবে — ফজর, যোহর, আসর, মাগরিব, এশার সময়। এটি
আল্লাহর তরফ থেকে আযাব।
৩. আল্লাহর রহমত থেকে বঞ্চিত হওয়া:
"কিয়ামতের দিন প্রথম যেটার হিসাব হবে, তা হলো নামাজ। যদি তা সঠিক হয়, অন্য সব
আমল সঠিক হবে। আর যদি তা নষ্ট হয়, বাকি সব আমলও বরবাদ হবে।"
(তিরমিযি, হাদীস: ৪১৩)
মৃত্যুর পর যদি কারও নামাজ ঠিক না থাকে, তার সব আমল বাতিল হয়ে যেতে পারে।
৪. জাহান্নামে নিক্ষেপ:
সূরা মুদ্দাসসির (৭৪:৪২–৪৩):
"তোমাদের কী জাহান্নামে নিয়ে এসেছে?"
তারা বলবে: 'আমরা নামাজ আদায়কারীদের অন্তর্ভুক্ত ছিলাম না।'"
জাহান্নামে যারা যাবে, তাদের বড় একটি কারণ হবে — তারা নামাজ পড়ত না।
৫. গাইয়্য নামক ভয়ংকর গর্তে পতন:
সূরা মারইয়াম (১৯:৫৯):
"তারা নামাজ নষ্ট করল, খেয়াল-খুশির অনুসরণ করল, ফলে তারা ‘গাইয়্য’ গর্তে
পতিত হবে।"
‘গাইয়্য’ হল জাহান্নামের সবচেয়ে ভয়ংকর অংশ, যা ৭০ বছরের গভীর — হাদীসে বলা
হয়েছে।
কী করব এখন?
১. আল্লাহর কাছে খাঁটি তওবা করুন।
২. নিয়মিত নামাজ শুরু করুন — ধীরে হলেও টেকসইভাবে।
৩. ছুটে যাওয়া নামাজ কাযা করার চেষ্টা করুন।
৪. আল্লাহর ভয় ও ভালোবাসা অন্তরে জাগিয়ে তুলুন।
সংক্ষিপ্ত উপসংহার:
বিষয় শাস্তি
কবর চাপ, অন্ধকার, সাপের কামড়
পরকাল জাহান্নামে পতন, মুখ কালো, আমল বাতিল
আল্লাহর দৃষ্টিতে অভিশপ্ত, গাফেল, অমান্যকারী
মৃত্যুর পর নামাজ না পড়ার শাস্তি পরলেন হাদিস অনুযায়ি এই শাস্তি সম্পর্কে জানা যাক চলুন।
নামাজ না পড়ার শাস্তি হাদিস
নামাজ না পড়ার শাস্তি নিয়ে কুরআনের পাশাপাশি হাদীসেও বহু শক্তিশালী সতর্কবাণী
এসেছে। রাসূলুল্লাহ (সা.) নিজে বিভিন্ন হাদীসে এর ভয়াবহতা তুলে ধরেছেন এবং
সাহাবীগণ ও তাবেঈনরা অনেক বাস্তব ঘটনার মাধ্যমে নামাজের গুরুত্ব বোঝিয়েছেন।
নামাজ না পড়ার শাস্তি — হাদীস দ্বারা প্রমাণিত
১. নামাজ না পড়া = কুফরি (ইসলাম থেকে বের হয়ে যাওয়া)
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন:
"আমাদের ও তাদের (অবিশ্বাসীদের) মাঝে পার্থক্য হলো নামাজ। সুতরাং যে ব্যক্তি তা
পরিত্যাগ করল, সে কুফর করল।"
(তিরমিযী: ২৬২১, মুসলিম: ৮২)
হাদীসটি ইঙ্গিত দেয়, ইচ্ছাকৃতভাবে নামাজ ছেড়ে দিলে ঈমান হুমকির মুখে পড়ে।
২. নামাজ ছেড়ে দিলে কোনো আমল কবুল হবে না
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন:
"যে ব্যক্তি নামাজ ছেড়ে দেয়, আল্লাহ তাআলা তার কোনো সৎকাজ কবুল করেন না।"
(মাজমাউয যাওয়াইদ)
৩. কবর ও পরকালের শাস্তি
রাসূল (সা.) একবার বলেন:
"আমি স্বপ্নে দুইজন ফেরেশতাকে দেখলাম, তারা আমাকে এমন এক লোকের কাছে নিয়ে
গেলো যার মাথা পাথর দিয়ে থেঁতলানো হচ্ছে। আমি জিজ্ঞেস করলাম, কেন? তারা বলল: সে
নামাজ পড়ত না, কুরআন তিলাওয়াত করত না, কিয়ামতের দিন পর্যন্ত এভাবেই চলবে।"
(সহীহ বুখারী: ৭০৪৭)
এটি ছিল রুহানী আযাবের বাস্তব চিত্র, যা নবীজীকে দেখানো হয়েছিল।
নামাজ না পড়ার শাস্তি হাদিস জানলেন এইবার শাস্তি সম্পর্কে একটি ঘটনা জানা যাক চলুন।
নামাজ না পড়ার শাস্তির একটি ঘটনা
ঘটনা: শুজা উল-আকরা – কবরে সাপের আযাব
এক সাহাবী বর্ণনা করেন, নবী করীম (সা.) বলেছেন:
"যে ব্যক্তি নামাজ পড়ে না, কেয়ামতের দিন তার কবরের মধ্যে আল্লাহ এক ভয়ানক
সাপ সৃষ্টি করবেন, যার নাম ‘শুজা উল-আকরা’। এই সাপ তাকে কেয়ামত পর্যন্ত দিনে
পাঁচবার কামড়াবে — প্রত্যেক ওয়াক্তের সময়।"
(মিশকাতুল মাসাবীহ)
এর কারণ: সে দুনিয়াতে দিনে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ত না।
ঘটনা: এক যুবকের করুণ মৃত্যু
ইবনে কাসীর (রহ.) বর্ণনা করেন এক যুবকের ঘটনা, যে নামাজে অলসতা করত। মৃত্যুর
আগে সে এমন এক বাক্য উচ্চারণ করেছিল:
"আল্লাহ আমাকে মাফ করবেন না, আমি জানি!"
– এতে সে ঈমানহীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে।
ব্যাখ্যা: যারা নামাজকে তুচ্ছ ভাবে, তারা ধীরে ধীরে আল্লাহর দয়া থেকেও
বঞ্চিত হয়ে যায়।
উপসংহার:
বিষয় হাদীস বা ঘটনা
কুফরি নামাজ ছেড়ে দিলে ইসলাম থেকে বেরিয়ে যাওয়ার শঙ্কা
কবরে আযাব পাথর দিয়ে মাথা থেঁতলানো, সাপের কামড়
দুনিয়াতেও প্রভাব রিজিকে অভাব, অন্তরে অস্থিরতা, মৃত্যুতে কষ্ট
পরকালে জাহান্নামের গর্ত ‘গাইয়্য’, মুখ কালো, অপমান
জানবো আমরা ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url