মসজিদে দান করার ফজিলত হাদিস ও দান করার নিয়ম

মসজিদে দান করার ফজিলত হাদিস, নিয়ম, ফায়দ সম্পর্কে জানতে আর্টিকেলটি বিস্তারিত পড়ুন।
মসজিদে দান করার ফজিলত হাদিস | জানবো আমরা । janbo amra |
মসজিদে দান করার ফজিলত হাদিস
মসজিদে দান করার ফজিলত হাদিস জানার পাশাপাশি মসজিদে দান করার নিয়ম ও ফায়দা সম্পর্কে হাদিস জানতে পারবেন আর্টিকেলটিতে।

সূচীপত্র ঃ মসজিদে দান করার ফজিলত হাদিস

মসজিদে দান করার ফজিলত হাদিস

মসজিদে দান করার ফজিলত নিয়ে অনেক সহীহ হাদিস রয়েছে। এখানে কিছু উল্লেখযোগ্য হাদিস পেশ করা হলো:

১. আল্লাহ্‌র ঘর নির্মাণের প্রতিদান জান্নাতে ঘর

হাদিস:

নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:

"যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য একটি মসজিদ নির্মাণ করে, আল্লাহ তার জন্য জান্নাতে একটি ঘর নির্মাণ করেন।"

 (সহীহ বুখারী: ৪৫০, সহীহ মুসলিম: ৫৩৩)

২. সদাকার ফজিলত

হাদিস:

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন:

 "সদকা গুনাহ মুছে দেয় যেমন পানি আগুন নিভিয়ে ফেলে।"

 (তিরমিযি: ২৬১৬)

মসজিদে দান একপ্রকার সদকা, বিশেষ করে যেটি সালাত, কুরআন শিক্ষার মতো ইবাদতের স্থান, তার খরচে সহায়তা করা।

৩. চলমান সাদকাহ (সাদকাহ জারিয়া)

হাদিস:

রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:

 "মানুষ মারা গেলে তার সব আমল বন্ধ হয়ে যায়, তিনটি ছাড়া: সদকায়ে জারিয়া, এমন ইলম যেটা থেকে উপকার পাওয়া যায়, এবং নেককার সন্তান যে তার জন্য দোআ করে।"

 (সহীহ মুসলিম: ১৬৩১)

মসজিদে দান একধরনের সাদকায়ে জারিয়া, কারণ এটা বহুদিন মানুষকে ইবাদতের উপকরণ সরবরাহ করে।

৪. মুনাফিকদের চিহ্নের বিপরীতে আমল

হাদিস:

রাসূল (সা.) বলেন:

 "মুনাফিকদের জন্য সবচেয়ে কঠিন সালাত ফজর ও ইশার সালাত। যদি তারা এর ফজিলত জানত, তাহলে হামাগুড়ি দিয়েও তা আদায় করতে আসত।"

 (সহীহ বুখারি ও মুসলিম)

মসজিদে দান করা মানে সেই জায়গাকে সুন্দর ও উপযোগী রাখা, যেন মুসল্লিরা অনুপ্রাণিত হয় জামাআতে নামাজ আদায়ে। 

মসজিদে দান করার ফজিলত

মসজিদে দান করার ফজিলত (ফযীলত) ইসলামে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও মহৎ কাজ হিসেবে বিবেচিত। কুরআন ও হাদীসে এর অসংখ্য ফজিলতের উল্লেখ রয়েছে। নিচে সংক্ষেপে কিছু মূল ফজিলত তুলে ধরা হলো:

১. জান্নাতে ঘর লাভ

রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:

 "যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে একটি মসজিদ নির্মাণ করে, আল্লাহ তার জন্য জান্নাতে একটি ঘর নির্মাণ করেন।"

(সহীহ বুখারী: ৪৫০, সহীহ মুসলিম: ৫৩৩)

২. সাদকাহ জারিয়া (চলমান দান)

মসজিদে দান একটি সাদকাহ জারিয়া — এমন দান যা মৃত্যুর পরেও সওয়াব প্রদান করতে থাকে।

হাদীস:

 "মানুষ মারা গেলে তার সব আমল বন্ধ হয়ে যায় তিনটি ব্যতীত:

১. সাদকাহ জারিয়া

২. উপকারী ইলম

৩. নেক সন্তান, যে তার জন্য দোয়া করে।"

 (সহীহ মুসলিম: ১৬৩১)

৩. গোনাহ মাফ ও দুনিয়া-আখিরাতে বরকত

হাদীস:

 "সদকা (দান) গোনাহ মুছে দেয়, যেমন পানি আগুন নিভিয়ে দেয়।"

 (তিরমিযি: ২৬১৬)

মসজিদে দান করা হচ্ছে উত্তম সদকা, যার মাধ্যমে গোনাহ মাফ হয় এবং রিজিকে বরকত আসে।

৪. মুমিনদের উপকারে আসা — উত্তম আমল

আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত:

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন:

 "মানুষদের মধ্যে সে-ই উত্তম, যে অন্যদের উপকারে আসে।"

 (আল-মুআ’জামুল আওসাত: ৬০২৬)

মসজিদে দান দিয়ে আপনি মুসল্লিদের ইবাদতের পরিবেশ তৈরি করে দেন — যা এক বিরাট উপকার।

৫. কিয়ামতের দিন ছায়া লাভ

যারা আল্লাহর রাস্তায় গোপনে দান করে, তাদের আল্লাহ কিয়ামতের দিন আরশের ছায়া দিবেন।

হাদীস:

 "সাত শ্রেণির মানুষকে আল্লাহ কিয়ামতের দিনে তাঁর আরশের ছায়া দান করবেন... তার মধ্যে একজন হলো: এমন ব্যক্তি, যে ডান হাত যা খরচ করে, বাঁ হাত তা জানে না (অর্থাৎ গোপনে দান করে)।"

 (সহীহ বুখারী: ১৪২৩)

সংক্ষেপে ফজিলতগুলো:

জান্নাতে ঘর লাভ

সাদকাহ জারিয়া (চিরস্থায়ী সওয়াব)

গোনাহ মাফ

দুনিয়া ও আখিরাতে বরকত

মুসল্লিদের উপকার

আল্লাহর আরশের ছায়া লাভ
মসজিদে দান করার ফজিলত হাদিস মসজিদে দান করার ফজিলত জেনেছেন এখন নিয়মকানুন জানুন চলুন। 

মসজিদে দান করার নিয়ম

মসজিদে দান করার নিয়ম বা Etiquette অনেকটা অন্য যেকোনো সাদাকাহ বা দানের মতোই, কিন্তু কিছু বিশেষ বিষয় মাথায় রাখা দরকার যাতে দান সুন্দরভাবে ও উদ্দেশ্যপুর্ণ হয়। নিচে মসজিদে দান করার সাধারণ নিয়মগুলো দেয়া হলো:

মসজিদে দান করার নিয়ম

১. নিয়ত ঠিক করে দান করুন

দান করার সময় অবশ্যই নিজের মনে সৎ ও পরিষ্কার নিয়ত করুন, আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য এবং মসজিদের কল্যাণের উদ্দেশ্যে দান করছেন।

২. সততা ও পরিষ্কার মন নিয়ে দিন

দান অবশ্যই খাঁটি, অবৈধ বা অন্য কারো অধিকার থেকে নেওয়া সম্পদ থেকে নয়। যেকোনো প্রকার ঠকবাজি বা অসদুপায় থেকে মুক্ত হতে হবে।

৩. দান মসজিদের তত্ত্বাবধায়ক বা ইমামের কাছে দিন

মসজিদের ব্যবস্থাপনা ঠিক রাখতে, দান সরাসরি মসজিদের ম্যানেজিং কমিটি বা ইমামের কাছে দেওয়াই উত্তম। কেউ কেউ মসজিদে আলাদা দানের বক্সও রাখে।

৪. দান গোপনে করতে পারেন

হাদিসে আছে, গোপনে দান করাও অনেক ফজিলতপূর্ণ। তবে মসজিদ উন্নয়নে দান করতে চাইলে তা প্রকাশ করেও দেওয়া যেতে পারে।

৫. দান করার পর দোয়া করুন

দান শেষে আল্লাহর কাছে দান গ্রহণের দোয়া ও দানের বরকতের জন্য প্রার্থনা করুন।

৬. অতিরিক্ত দানের ক্ষেত্রে লিখিত রেকর্ড রাখুন

যদি বড় পরিমাণ অর্থ দান করেন, তাহলে তার একটি রসিদ বা লিখিত কাগজপত্র রাখুন যাতে মসজিদের ব্যবস্থাপনা স্বচ্ছ থাকে।

৭. মসজিদের জন্য নির্দিষ্ট দান দিন

মসজিদ রক্ষণাবেক্ষণ, নির্মাণ, মাইকের খরচ, ইমাম খরচ ইত্যাদি কাজে ব্যবহারযোগ্য অর্থ দিন।

অতিরিক্ত টিপস:

মসজিদে শুধু অর্থই নয়, কাপড়, খাদ্য বা ইবাদতের জন্য অন্যান্য জিনিসও দান করা যেতে পারে।

যদি সম্ভব হয়, নিয়মিত মাসিক বা ত্রৈমাসিক ভাবে দান করুন, এতে মসজিদের কাজ চালাতে সুবিধা হয়। মসজিদে দান করার নিয়ম জানালাম এইবার দান করার ফায়দা জানুন

মসজিদে দান করার ফায়দা

মসজিদে দান করার ফায়দা অনেক। নিচে প্রধান কয়েকটি ফায়দা সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো:

মসজিদে দান করার ফায়দা

১. জান্নাতে ঘর পাওয়া

আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, মসজিদ নির্মাণ বা তার উন্নয়নে দান করা মানুষের জন্য জান্নাতে একটি বাড়ি তৈরী করে।

২. চিরস্থায়ী সওয়াব

মসজিদে দান করা সদকা জারিয়া, অর্থাৎ মৃত্যুর পরও তার সওয়াব চলতে থাকে।

৩. গুনাহ মাফ হওয়া

দান করা গুনাহ মুছে ফেলে যেমন পানি আগুন নিভিয়ে দেয়।

৪. আল্লাহর রহমত ও বরকত পাওয়া

দানকারী জীবনে আল্লাহর বিশেষ বরকত নাযিল হয়, তার জীবন ও রিজিকে বৃদ্ধি ঘটে।

৫. মুমিনদের উপকার করা

মসজিদে দান দিয়ে মুসল্লিদের ইবাদতের পরিবেশ সুন্দর হয়, যা সবাইকে উপকৃত করে।

৬. কিয়ামতের দিনে ছায়ার নিচে থাকা

গোপনে দানকারী কিয়ামতের দিনে আল্লাহর আরশের ছায়ার নিচে থাকবে। মসজিদে দান করার ফায়দা পড়ে নিলেন দান করার আয়াত জানা যাক তাহলে এখন। 

মসজিদে দান করার আয়াত

মসজিদে দান করার সর্ম্পকে সরাসরি আল্লাহর কুরআন শরীফে স্পষ্ট আয়াত নেই, তবে সদকা, দান এবং আল্লাহর পথে খরচ করার গুরুত্ব সম্পর্কে অনেক আয়াত আছে যেগুলো মসজিদ নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য দানের প্রয়োজনীয়তা বোঝায়।

নিচে কিছু প্রাসঙ্গিক আয়াত দেয়া হলো:

মসজিদে দানের জন্য প্রাসঙ্গিক আয়াত

১. সূরা আল-বাকারাহ (২: ২৬৫)

"যারা তাদের ধন-সম্পদকে রাত-দিন, গোপনে-ঘোষণায় আল্লাহর পথে ব্যয় করে, তাদের প্রতিফল তাদের পালনকর্তার কাছে রয়েছে..."

২. সূরা আত-তাওবা (৯: ১৮)

 "যারা আল্লাহর ঘর (মসজিদ) রক্ষণাবেক্ষণ করে এবং আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য তাতে ইমান আনে, তাদের জন্য পরকালে তাদের পালনকর্তার কাছে পুরস্কার রয়েছে..."

৩. সূরা আল-বাকারাহ (২: ১২৭)

"এবং যখন ইবরাহীম (আঃ) মক্কায় কাআবাহ নির্মাণ করছিলেন তখন বললেন: ‘হে আমাদের পালনকর্তা! আমাদের মধ্যে ও আমাদের বংশধরদের মধ্যে এমন স্থাপন কর, যারা নামাজ আদায় করবে। হে আমাদের পালনকর্তা! আমাদের হৃদয়কে সৎ ও নিষ্কলঙ্ক কর এবং আমাদের কাছে আমাদের কর্মের থেকে কৃপণতা প্রত্যাহার কর।’"

সারাংশ

কুরআন মহান আল্লাহর পথে ধন খরচ, বিশেষ করে মসজিদের জন্য খরচকে প্রশংসা করেছে এবং এর জন্য জান্নাতের আশ্বাস দিয়েছে।

মসজিদে দান করার আয়াত পড়লেন এখন শিক্ষণীয় ঘটনা জানা যাক দান সম্পর্কে। 

মসজিদে দান করার ঘটনা

মসজিদে দান করার অনেক বিখ্যাত ও শিক্ষণীয় ঘটনা ইসলাম ইতিহাসে পাওয়া যায়। এখানে একটা উল্লেখযোগ্য ঘটনা শেয়ার করছি, যা মসজিদে দানের ফজিলত ও সদকার গুরুত্ব বুঝাতে সাহায্য করবে:

ঘটনার নাম: উসমান ইবনে আফফান রা.-এর মসজিদে দান

উসমান ইবনে আফফান (রা.) ছিলেন নবী (সা.)র একজন সৎ সাহাবী ও তৃতীয় খলিফা। তিনি দান-খয়রাত ও মসজিদ নির্মাণে বিশেষ উদ্যোগী ছিলেন।

একবার তিনি মসজিদে দান করার জন্য অনেক বড় পরিমাণ সম্পদ দান করেন। নবী (সা.) তাকে বললেন:

 "আপনার জন্য জান্নাতে একটা বাড়ি তৈরি হয়েছে।"

উসমান (রা.) এতটাই উদার ছিলেন যে, তিনি মসজিদের পানি সরবরাহের জন্য কূপ খনন করেন, যা অনেক বছর ধরে মুসল্লিদের জন্য সহজতা সৃষ্টি করেছিল। তিনি মসজিদের উন্নয়নে অসংখ্য দান ও ত্যাগ করেছেন।

আরেকটি ঘটনা:

আবু বকর সিদ্দিক (রা.) এর সদকা

রাসুল (সা.) বলেছেন, যখন আবু বকর (রা.) মহান যুদ্ধে (যেমন বেদর) দান করেন, তিনি সব সম্পদ আল্লাহর পথে খরচ করেন, যার মধ্যে অনেক মসজিদের জন্য দানও ছিল। তিনি দানের মাধ্যমে ইসলামের ভিত্তি মজবুত করেছেন।

শিক্ষা:

মসজিদে দান শুধুমাত্র টাকা নয়, সময়, শ্রম ও সম্পদের ভালো ব্যবহার করা। সাহাবাগণ এগুলো বাস্তবে প্রমান করেছেন। মসজিদে দান করার ঘটনা জানালাম এইবারর জানুন এক মসজিদের টাকা অন্য মসজিদে দান করা যাবে কিনা। 

এক মসজিদের টাকা অন্য মসজিদে দান করা যাবে কি

এক মসজিদের জন্য সঞ্চিত টাকা অন্য মসজিদে দান করা সাধারণত جائز নয়, কারণ ঐ টাকা সেই মসজিদের জন্য মানুষের দান বা উইকাফ হিসেবে জমা হয়েছে এবং সেটা ওই মসজিদের উন্নয়ন বা রক্ষণাবেক্ষণের জন্য নির্দিষ্ট।

কারণসমূহ:

১. উইকাফ বা দানের উদ্দেশ্য পালন:

দাতা যেই মসজিদের জন্য দান করেছেন, সেই উদ্দেশ্য অনুযায়ী টাকা ব্যবহার করা দরকার।

২. স্বচ্ছতা ও ন্যায়বিচার:

যদি অন্য কোনো মসজিদে টাকা দেওয়া হয়, তাহলে পুরানো দাতা ও স্থানীয় কমিটির সঙ্গে সমস্যা হতে পারে।

৩. আখিরাতের হিসাব:

কেউ যদি দান করে নির্দিষ্ট মসজিদের জন্য, তখন তার সওয়াব সেই মসজিদের কল্যাণে থাকে, অন্য মসজিদে দিলে সে ফজিলত কমে যেতে পারে।

তবে, কিছু ক্ষেত্রে অনুমতি নিয়ে দেওয়া যেতে পারে:

যদি ঐ মসজিদে এত অর্থ থাকে যা তাদের কাজের বাইরে এবং তারা সম্মতি দেয় অন্য মসজিদে টাকা স্থানান্তরের জন্য, তবে সেটা সম্ভব।

অথবা ঐ এলাকার একাধিক মসজিদের জন্য একটি সাধারণ ফান্ড থাকলে, সেখান থেকে প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যয় করা যেতে পারে।

সারসংক্ষেপ:

মসজিদের টাকা অন্য মসজিদে দেওয়ার আগে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট মসজিদের কমিটি বা পরিচালকদের অনুমতি নেওয়া উচিত।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

জানবো আমরা ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url