চার রাকাত সুন্নত নামাজে সুরা পড়ার নিয়ম জানুন
চার রাকাত সুন্নত নামাজে সুরা পড়ার নিয়ম ও নামাজের ১১ টি সুরা বাংলা সম্পর্কে জানতে আর্টিকেলটি বিস্তারিত পড়ুন।
চার রাকাত সুন্নত নামাজে সুরা পড়ার নিয়ম জানার পাশাপাশি চার রাকাত
সুন্নত নামাজে সুরা পড়ার নিয়ম হাদীস ও কিরাত পড়ার নিয়ম জানতে পারবেন।
![]() |
চার রাকাত সুন্নত নামাজে সুরা পড়ার নিয়ম |
সূচীপত্র ঃ চার রাকাত সুন্নত নামাজে সুরা পড়ার নিয়ম
চার রাকাত সুন্নত নামাজে সুরা পড়ার নিয়ম
চার রাকাত সুন্নত নামাজে (যেমন, যোহরের পূর্বের ৪ রাকাত সুন্নত) সুরা পড়ার নিয়ম
হলো:
প্রতি রাকাতে যা পড়তে হয়:
১. প্রথম রাকাত:
তাকবিরে তাহরিমা (নামাজ শুরু করার জন্য “আল্লাহু আকবার” বলা)
সানা (সুবহানাকাল্লাহুম্মা…)
তাউজ (আঊযুবিল্লাহি…)
বিসমিল্লাহ
সূরা ফাতিহা
অন্য একটি সূরা (যেমন সূরা ইখলাস, সূরা কাওসার ইত্যাদি)
২. দ্বিতীয় রাকাত:
সূরা ফাতিহা
অন্য একটি সূরা
তারপর রুকু, সিজদা ও প্রথম তাশাহহুদ (আত্তাহিয়্যাত)
৩. তৃতীয় রাকাত:
শুধু সূরা ফাতিহা
অন্য একটি সূরা
৪. চতুর্থ রাকাত:
শুধু সূরা ফাতিহা
অন্য একটি সূরা
তারপর রুকু, সিজদা ও শেষ তাশাহহুদ (আত্তাহিয়্যাত, দরুদ, দোয়া) ও সালাম
সংক্ষেপে:
চার রাকাত সুন্নতে প্রত্যেক রাকাতে সূরা ফাতিহা ও অন্য একটি সূরা পড়া সুন্নত।
সুন্নতের নামাজে প্রতিটি রাকাতেই পূর্ণ কিরাআত করা উত্তম। চার রাকাত সুন্নত নামাজে সুরা পড়ার নিয়ম জানলেন এখন সুরা পড়ার নিয়ম জানা যাক চলুন।
নামাজে সুরা পড়ার নিয়ম
নামাজে সূরা পড়ার নিয়ম সংক্ষেপে ও সহজভাবে নিচে দেওয়া হলো:
নামাজে সূরা পড়ার মূল নিয়ম (ফরজ, সুন্নত ও নফল নামাজের জন্য প্রযোজ্য):
১. প্রতিটি রাকাতে:
প্রথমে সূরা ফাতিহা (الحمد لله رب العالمين...) পড়া ফরজ বা ওয়াজিব (ইমাম ও
মুত্তাদির ভিন্নভাবে পালন করবেন)।
এরপর কুরআনের আরেকটি সূরা বা অন্তত ৩ আয়াত সমপরিমাণ কুরআনের অংশ পাঠ করা সুন্নত
(যদি আপনি একা নামাজ পড়েন বা ইমাম হন)।
রাকাত অনুযায়ী সূরা পড়ার নিয়ম:
১. দুই রাকাতের নামাজে (যেমন: ফজরের ফরজ):
উভয় রাকাতে সূরা ফাতিহা + অন্য একটি সূরা পড়বেন।
২. তিন রাকাত (যেমন: মাগরিব) বা চার রাকাত (যেমন: যোহরের ফরজ):
প্রথম দুই রাকাতে: সূরা ফাতিহা + অন্য একটি সূরা।
শেষ দুই রাকাতে: শুধু সূরা ফাতিহা পড়বেন, অতিরিক্ত সূরা নয় (ফরজ নামাজে)।
৩. সুন্নত ও নফল নামাজ:
সব রাকাতে সূরা ফাতিহা + অন্য একটি সূরা পড়া উত্তম।
সংক্ষেপে উদাহরণ:
এক রাকাতের ভিতর পড়া:
১. সূরা ফাতিহা
২. এরপর – সূরা ইখলাস (قُلْ هُوَ ٱللَّهُ أَحَدٌ) বা অন্য ছোট সূরা
টিপস:
সঠিক তাজবীদ সহ কুরআন তিলাওয়াত করা আবশ্যক।
সূরা ফাতিহা না পড়লে নামাজ শুদ্ধ হবে না (যদি আপনি একা নামাজ পড়েন)।
জামাতে দাঁড়ালে, হানাফি মতে, শুধু ইমাম সূরা পড়ে; মুত্তাদির চুপ থাকেন। নামাজে সুরা পড়ার নিয়ম জেনেছেন সুন্নত নামাজের ক্ষেত্রেও জেনে নিন।
সুন্নত নামাজে সুরা পড়ার নিয়ম
সুন্নত নামাজে সূরা পড়ার নিয়ম অনেক সহজ ও সরল, নিচে ধাপে ধাপে দেওয়া হলো:
সুন্নত নামাজে সূরা পড়ার নিয়ম (প্রত্যেক রাকাতে):
প্রতিটি রাকাতে এইভাবে পড়বেন:
১. তাকবিরে তাহরিমা – “আল্লাহু আকবার” বলে নামাজ শুরু।
২. সানা – "সুবহানাকাল্লাহুম্মা..." দোয়া।
৩. আঊযুবিল্লাহি – "আঊযু বিল্লাহি মিনাশ শাইতোনির রাজিম"
৪. বিসমিল্লাহ – "বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম"
৫. সূরা ফাতিহা (অবশ্যই পড়তে হবে
৬. অন্য একটি সূরা (যেকোনো ছোট সূরা – যেমন সূরা ইখলাস, সূরা কাওসার)
প্রতিটি রাকাতে সূরা ফাতিহার পর একটি সূরা পড়া উত্তম ও মুস্তাহাব।
চার রাকাত সুন্নত (যেমন যোহরের আগের সুন্নত):
প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ – প্রত্যেক রাকাতে সূরা ফাতিহার পর একটি করে সূরা
পড়বেন।
দুই রাকাত সুন্নত (যেমন ফজরের আগে):
দুই রাকাতেই সূরা ফাতিহা + আরেকটি সূরা পড়বেন।
সংক্ষেপে:
সুন্নত ও নফল নামাজে প্রতিটি রাকাতে সূরা ফাতিহা ও আরও একটি সূরা পড়া সুন্নাত।
ফরজ নামাজের মতো শেষ রাকাতগুলিতে শুধু ফাতিহা পড়ার নিয়ম এখানে নেই – বরং প্রতিটি
রাকাতে কিরাআত করবেন। সুন্নত নামাজে সুরা পড়ার নিয়ম পড়লেন এইবার কিরাত পড়ার নিয়মকানুন জেনে নিন।
নামাজে কিরাত পড়ার নিয়ম
নামাজে কিরাত পড়ার নিয়ম বলতে বোঝায়—নামাজে কোন রাকাতে কীভাবে সূরা ফাতিহা ও অন্য
কিরাআত (সূরা বা আয়াত) পড়তে হবে। নিচে সহজভাবে তা ব্যাখ্যা করা হলো:
১. কিরাত কী?
কিরাত মানে কুরআন তেলাওয়াত করা। নামাজে কিরাত বলতে বোঝায়—সূরা ফাতিহা ও এরপর অন্য
সূরা বা আয়াত পড়া।
২. কিরাত পড়ার সাধারণ নিয়ম:
নামাজ রাকাত সংখ্যা কিরাত পড়ার নিয়ম
ফরজ (৪ রাকাত) ১ম ও ২য় রাকাতে: সূরা ফাতিহা + অন্য সূরা<br>৩য় ও ৪র্থ
রাকাতে: শুধু সূরা ফাতিহা (হানাফি মতে)
ফরজ (৩ রাকাত) ১ম ও ২য় রাকাতে: সূরা ফাতিহা + অন্য সূরা<br>৩য় রাকাতে: শুধু
সূরা ফাতিহা
সুন্নত ও নফল সব রাকাতে: সূরা ফাতিহা + অন্য সূরা
২ রাকাত নামাজ (যেমন ফজরের ফরজ) উভয় রাকাতে: সূরা ফাতিহা + অন্য সূরা
৩. সূরা ফাতিহা পড়া ফরজ?
একা নামাজ পড়লে: ফাতিহা পড়া ফরজ
ইমামের পেছনে (হানাফি মতে): চুপ থাকা, ইমাম কিরাত করবেন
৪. ছোট কিরাতের উদাহরণ (সূরা):
সূরা ইখলাস (قُلْ هُوَ ٱللَّهُ أَحَدٌ)
সূরা কাওসার (إِنَّا أَعْطَيْنَاكَ ٱلْكَوْثَرَ)
সূরা ফালাক, সূরা নাস ইত্যাদি
৫. কিরাতের শুদ্ধতা:
তাজবীদ অনুযায়ী শুদ্ধভাবে কুরআন তেলাওয়াত করা জরুরি
ভুল উচ্চারণ নামাজের ক্ষতি করতে পারে
নামাজে কিরাত পড়ার নিয়ম জানালাম এখন ১১ টি সুরা বাংলাতে জানুন।
নামাজের ১১ টি সুরা বাংলা
নামাজে পড়ার জন্য ব্যবহৃত ১১টি ছোট সূরা নিচে আরবি, বাংলা উচ্চারণ এবং বাংলা
অর্থসহ দেওয়া হলো, যাতে আপনি সহজে মুখস্থ করতে ও নামাজে ব্যবহার করতে পারেন।
১. সূরা আল-ফাতিহা (সূরা: ১)
আরবি:
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَـٰنِ الرَّحِيمِ
الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ
الرَّحْمَـٰنِ الرَّحِيمِ
مَالِكِ يَوْمِ الدِّينِ
إِيَّاكَ نَعْبُدُ وَإِيَّاكَ نَسْتَعِينُ
اهْدِنَا الصِّرَاطَ الْمُسْتَقِيمَ
صِرَاطَ الَّذِينَ أَنْعَمْتَ عَلَيْهِمْ غَيْرِ الْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ وَلَا
الضَّالِّينَ
বাংলা উচ্চারণ:
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আলহামদু লিল্লাহি রব্বিল ‘আলামিন
আর-রাহমানির রাহিম
মালিকি ইয়াওমিদ্দিন
ইয়্যাাকা না’বুদু ওয়া ইয়্যাাকা নাস্তা’ইন
ইহদিনাস সিরা-ত্বাল মুস্তা কিম
সিরা-ত্বাল লাযিনা আন’আমতা ‘আলাইহিম
গাইরিল মাগদুবি ‘আলাইহিম ওয়ালাদ্দল্লিন
অর্থ:
করুণাময়, দয়ালু আল্লাহর নামে
সব প্রশংসা আল্লাহর, যিনি বিশ্বজগতের পালনকর্তা
পরম করুণাময়, অসীম দয়ালু
প্রতিফল দিবসের মালিক
আমরা শুধু তোমারই ইবাদত করি এবং তোমারই সাহায্য চাই
আমাদের সরল পথ দেখাও
তাদের পথ, যাদেরকে তুমি নিয়ামত দান করেছ
যাদের ওপর গজব হয়নি এবং যারা পথভ্রষ্ট নয়
২. সূরা আল-ইখলাস (সূরা: ১১২
আরবি:
قُلْ هُوَ ٱللَّهُ أَحَدٌ
ٱللَّهُ ٱلصَّمَدُ
لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُولَدْ
وَلَمْ يَكُن لَّهُۥ كُفُوًا أَحَدٌ
বাংলা উচ্চারণ:
কুল হুয়াল্লাহু আহাদ
আল্লাহুস সমাদ
লম ইয়ালিদ ওয়া লম ইউলাদ
ওয়া লম ইয়াকুল্লাহু কুফুয়ান আহাদ
অর্থ:
বলো, তিনি আল্লাহ, একমাত্র
আল্লাহ অমুখাপেক্ষী
তিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং জন্ম নেননি
তাঁর সমতুল্য কেউই নেই
৩. সূরা আল-কাওসার (সূরা: ১০৮)
আরবি:
إِنَّا أَعْطَيْنَاكَ الْكَوْثَرَ
فَصَلِّ لِرَبِّكَ وَانْحَرْ
إِنَّ شَانِئَكَ هُوَ الْأَبْتَرُ
বাংলা উচ্চারণ:
ইন্না আ'তাইনাকাল কাওসার
ফাসল্লি লি রাব্বিকা ওয়ানহার
ইন্না শানিয়াকা হুয়াল আবতার
অর্থ:
নিশ্চয় আমি তোমাকে কাওসার দান করেছি
তোমার প্রভুর উদ্দেশ্যে নামাজ পড়ো ও কুরবানি করো
নিশ্চয় তোমার শত্রুই নিঃসন্তান
৪. সূরা আল-ফালাক (সূরা: ১১৩)
আরবি:
قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ ٱلْفَلَقِ
مِن شَرِّ مَا خَلَقَ
وَمِن شَرِّ غَاسِقٍ إِذَا وَقَبَ
وَمِن شَرِّ ٱلنَّفَّـٰثَـٰتِ فِى ٱلْعُقَدِ
وَمِن شَرِّ حَاسِدٍ إِذَا حَسَدَ
বাংলা উচ্চারণ:
কুল আউযু বিরাব্বিল ফালাক
মিন শাররি মা খালাক
ওয়া মিন শাররি গাসিকিন ইযা ওয়াকাব
ওয়া মিন শাররিন নাফফাসাতি ফিল উকাদ
ওয়া মিন শাররি হাসিদিন ইযা হাসাদ
অর্থ:
বলো, আমি আশ্রয় চাই ঊষার প্রতিপালকের
তিনি যা সৃষ্টি করেছেন তার অনিষ্ট থেকে
আঁধার নামলে রাত্রির অনিষ্ট থেকে
গ্রন্থিতে ফুঁ দেওয়া জাদুকারিণীদের অনিষ্ট থেকে
হিংসুকের অনিষ্ট থেকে যখন সে হিংসা করে
৫. সূরা আন-নাস (সূরা: ১১৪)
আরবি:
قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ ٱلنَّاسِ
مَلِكِ ٱلنَّاسِ
إِلَـٰهِ ٱلنَّاسِ
مِن شَرِّ ٱلْوَسْوَاسِ ٱلْخَنَّاسِ
ٱلَّذِى يُوَسْوِسُ فِى صُدُورِ ٱلنَّاسِ
مِنَ ٱلْجِنَّةِ وَٱلنَّاسِ
বাংলা উচ্চারণ:
কুল আউযু বিরাব্বিন নাস
মালিকিন নাস
ইলাহিন নাস
মিন শাররিল ওয়াসওয়াসিল খান্নাস
আল্লাজি ইউওয়াসউইসু ফি সুদূরিন নাস
মিনাল জিন্নাতি ওয়ান নাস
অর্থ:
বলো, আমি আশ্রয় চাই মানুষের প্রভুর
মানুষের মালিকের
মানুষের উপাস্যের
চুপিসারে কুমন্ত্রণা দানকারীর অনিষ্ট থেকে
যে কুমন্ত্রণা দেয় মানুষের অন্তরে
সে জিনদের মধ্য থেকেও হতে পারে, মানুষের মধ্য থেকেও
৬. সূরা আল-আসর (সূরা: ১০৩)
আরবি:
وَالْعَصْرِ
إِنَّ الْإِنسَانَ لَفِي خُسْرٍ
إِلَّا الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ
وَتَوَاصَوْا بِالْحَقِّ وَتَوَاصَوْا بِالصَّبْرِ
বাংলা উচ্চারণ:
ওয়াল আসর
ইন্নাল ইনসানা লাফি খুসর
ইল্লাল্লাজিনা আমানু ওয়া আমিলুস সালিহাত
ওয়া তাওয়াসাউ বিল হাক্কি ওয়া তাওয়াসাউ বিস সবর
অর্থ:
কসম সময়ের
নিশ্চয় মানুষ ক্ষতির মধ্যে রয়েছে
তবে তারা নয়, যারা ঈমান এনেছে, সৎকর্ম করেছে
এবং পরস্পরকে সত্য ও ধৈর্যের উপদেশ দিয়েছে
৭. সূরা আল-কাফিরুন (সূরা: ১০৯)
আরবি:
قُلْ يَا أَيُّهَا الْكَافِرُونَ
لَا أَعْبُدُ مَا تَعْبُدُونَ
وَلَا أَنتُمْ عَابِدُونَ مَا أَعْبُدُ
وَلَا أَنَا عَابِدٌ مَّا عَبَدتُّمْ
وَلَا أَنتُمْ عَابِدُونَ مَا أَعْبُدُ
لَكُمْ دِينُكُمْ وَلِيَ دِينِ
বাংলা উচ্চারণ:
কুল ইয়াআইয়ুহাল কাফিরূন
লা আ'বুদু মা তা'বুদুন
ওয়া লা আনতুম 'আবিদূনা মা আ'বুদ
ওয়া লা আনা 'আবিদুম মা 'আবাততুম
ওয়া লা আনতুম 'আবিদূনা মা আ'বুদ
লাকুম দিনুকুম ওয়ালিয়্যাদিন
অর্থ:
বলো, হে কাফিররা
আমি ইবাদত করি না, তোমরা যার ইবাদত করো
তোমরাও ইবাদত করো না, আমি যার করি
আমি কখনোই ইবাদত করিনি তোমাদের উপাস
নিশ্চয়ই! আগের ৭টি সূরা বাদে আরও ৪টি ছোট ও সহজ সূরা নিচে দেওয়া হলো আরবি, বাংলা
উচ্চারণ এবং অর্থসহ, যেন আপনি নামাজে পড়তে পারেন:
৮. সূরা আল-ফীল (সূরা: ১০৫)
আরবি:
أَلَمْ تَرَ كَيْفَ فَعَلَ رَبُّكَ بِأَصْحَابِ الْفِيلِ
أَلَمْ يَجْعَلْ كَيْدَهُمْ فِي تَضْلِيلٍ
وَأَرْسَلَ عَلَيْهِمْ طَيْرًا أَبَابِيلَ
تَرْمِيهِمْ بِحِجَارَةٍ مِّن سِجِّيلٍ
فَجَعَلَهُمْ كَعَصْفٍ مَّأْكُولٍ
বাংলা উচ্চারণ:
আলাম তারা কাইফা ফা‘আলা রাব্বুকা বিআসহাবিল ফীল
আলাম ইয়াজ‘আল কাইদাহুম ফী তাদলীল
ওয়া আরসালা ‘আলাইহিম তইরান আবাবীল
তারমীহিম বিহিজারাতিম মিন সিজ্জীল
ফা জা‘আলাহুম কা‘আসফিম মা’কূল
অর্থ:
তুমি কি দেখনি, তোমার প্রতিপালক হাতির দলের সঙ্গে কী করেছিলেন?
তিনি কি তাদের ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করেননি?
আর তিনি তাদের ওপর পাঠিয়েছিলেন ঝাঁকে ঝাঁকে পাখি
যারা তাদের ওপর নিক্ষেপ করেছিল পাথর
আর তিনি তাদের করে দিয়েছিলেন খাওয়া খাওয়া ফসলের মতো
৯. সূরা আল-মাউন (সূরা: ১০৭)
আরবি:
أَرَأَيْتَ الَّذِي يُكَذِّبُ بِالدِّينِ
فَذَٰلِكَ الَّذِي يَدُعُّ الْيَتِيمَ
وَلَا يَحُضُّ عَلَىٰ طَعَامِ الْمِسْكِينِ
فَوَيْلٌ لِّلْمُصَلِّينَ
الَّذِينَ هُمْ عَن صَلَاتِهِمْ سَاهُونَ
الَّذِينَ هُمْ يُرَاءُونَ
وَيَمْنَعُونَ الْمَاعُونَ
বাংলা উচ্চারণ:
আরাইতা আল্লাজি ইউকাজ্জিবু বিদ্দীন
ফা-যালিকাল্লাজি ইয়াদু’উল ইয়াতীম
ওয়া লা ইয়াহুদ্দু ‘আলা তো‘আমিল মিসকীন
ফাওয়াইলুল লিল মুসাল্লীন
আল্লাজিনা হুম ‘আন সলাতিহিম সাহূন
আল্লাজিনা হুম ইউরা’ঊন
ওয়া ইয়ামনাঊনাল মা‘ঊন
অর্থ:
তুমি কি তাকে দেখেছ, যে প্রতিফল দিবসকে অস্বীকার করে?
সে-ই তো ইয়াতীমকে ধাক্কা দেয়
এবং মিসকিনকে খাদ্য দানে উৎসাহিত করে না
অতএব দুর্ভোগ সেসব নামাজীদের জন্য
যারা নিজেদের নামাজে অমনোযোগী
যারা লোক দেখানোর জন্য নামাজ পড়ে
এবং ছোটখাটো জিনিস দিতে কার্পণ্য করে
১০. সূরা আল-কুরাইশ (সূরা: ১০৬)
আরবি:
لِإِيلَافِ قُرَيْشٍ
إِيلَافِهِمْ رِحْلَةَ الشِّتَاءِ وَالصَّيْفِ
فَلْيَعْبُدُوا رَبَّ هَٰذَا الْبَيْتِ
الَّذِي أَطْعَمَهُم مِّن جُوعٍ وَآمَنَهُم مِّنْ خَوْفٍ
বাংলা উচ্চারণ:
লিইলা-ফি কুরাইশ
ইলা-ফিহিম রিহলাতাশ শিতাই ওয়া ছাইফ
ফালইয়াবুদু রাব্বা হা-যাল বাইত
আল্লাযি আত‘আমাহুম মিন জু-‘ইন ওয়া আমানাহুম মিন খউফ
অর্থ:
কুরাইশ গোত্রের মিল-বন্ধনের জন্য
তাদের শীত ও গ্রীষ্মের সফরের কারণে
তারা যেন এই ঘরের প্রভুর ইবাদত করে
যিনি তাদের ক্ষুধা থেকে আহার দিয়েছেন
এবং ভয় থেকে নিরাপত্তা দিয়েছেন
১১. সূরা আন-নাসর (সূরা: ১১০)
আরবি:
إِذَا جَاءَ نَصْرُ اللَّهِ وَالْفَتْحُ
وَرَأَيْتَ النَّاسَ يَدْخُلُونَ فِي دِينِ اللَّهِ أَفْوَاجًا
فَسَبِّحْ بِحَمْدِ رَبِّكَ وَاسْتَغْفِرْهُ
إِنَّهُ كَانَ تَوَّابًا
বাংলা উচ্চারণ:
ইজা জা-আ নাসরুল্লাহি ওয়াল ফাতহ
ওয়া রাইইতান নাসা ইয়াদখুলূনা ফী দীনি-ল্লাহি আফওয়াজা
ফাসাব্বিহ বিহামদি রাব্বিকা ওয়াসতাগফিরহ
ইন্নাহু কানা তাওয়াবা
অর্থ:
যখন আসবে আল্লাহর সাহায্য ও বিজয়
আর তুমি দেখবে লোকেরা দলে দলে আল্লাহর দ্বীনে প্রবেশ করছে
তখন তোমার প্রতিপালকের প্রশংসাসহ তাঁর পবিত্রতা ঘোষণা করো ও তাঁর নিকট ক্ষমা
প্রার্থনা করো
নিশ্চয় তিনি তাওবা গ্রহণকারী
নামাজের ১১ টি সুরা বাংলাতে জেনে নিলেন এইবার সুন্নত নামাজে সুরা পড়ার নিয়ম হাদীস জানা যাক চলুন।
চার রাকাত সুন্নত নামাজে সুরা পড়ার নিয়ম হাদীস
চার রাকাত সুন্নত নামাজে সূরা পড়ার নিয়ম সম্পর্কে হাদীসে সরাসরি একটি নির্দিষ্ট
"চার রাকাত সুন্নতে প্রত্যেক রাকাতে সূরা পড়তে হবে" — এমন ভাষায় কোনো হাদীস নেই,
তবে এর ভিত্তি রয়েছে রাসূল (সা.)-এর আমল ও সাহাবায়ে কিরামের বর্ণনাগুলো থেকে।
১. চার রাকাত সুন্নতে প্রত্যেক রাকাতে কিরাআত করার আমল:
হাদীস:
আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রাযি.) বলেন:
"আমি রাসূলুল্লাহ (সা.)-কে যোহরের আগে চার রাকাত এবং পরে দুই রাকাত সালাত
আদায় করতে দেখেছি।"
[সহীহ বুখারী, হাদীস: ১১৮০]
এ হাদীস থেকে যোহরের আগের ৪ রাকাত সুন্নতের গুরুত্ব বোঝা যায়।
২. প্রত্যেক রাকাতে কিরাআত করার ফিকহি ব্যাখ্যা:
ইমাম আবু হানিফা (রহ.) ও হানাফি মাযহাবের মতে:
সুন্নত ও নফল নামাজে প্রত্যেক রাকাতে সূরা ফাতিহার পর অন্য একটি সূরা পড়া
মুস্তাহাব (অত্যন্ত উত্তম)।
দলীল:
রাসূল (সা.)-এর বহু তাহাজ্জুদ, সুন্নত ও নফল নামাজ এর বর্ণনায় দেখা যায়, তিনি
প্রত্যেক রাকাতে কিরাআত করতেন।
যেমন: আয়েশা (রা.) বলেন, “রাসূল (সা.) রাতে দুই রাকাত করে সালাত আদায় করতেন...”
[সহীহ বুখারী, হাদীস: ১১৩৫]
এই নামাজগুলোতে প্রতিটি রাকাতে তিনি কিরাআত করতেন।
ফিকহি সিদ্ধান্ত:
চার রাকাত সুন্নত নামাজে:
প্রত্যেক রাকাতে সূরা ফাতিহা + অন্য একটি সূরা পড়া সুন্নত।
এটি রাসূল (সা.)-এর নিয়মিত আমলের ওপর ভিত্তি করে নির্ধারিত।
চার রাকাত সুন্নত নামাজে প্রত্যেক রাকাতে সূরা ফাতিহার পর সূরা পড়া সুন্নত —
এটি সরাসরি হাদীস দ্বারা প্রমাণিত না হলেও রাসূল (সা.)-এর আমল ও ফিকহি ইজতিহাদে
এটি প্রতিষ্ঠিত ও প্রচলিত।
চার রাকাত সুন্নত নামাজে সুরা পড়ার নিয়ম হাদীস পড়ে নিলেন এখন নামাজ না পড়লে গুনাহ হবে কিনা জেনে নিন চলুন।
যোহরের সুন্নত নামাজ না পড়লে কি গুনাহ হবে
যোহরের সুন্নত নামাজ না পড়লে গুনাহ হবে কি না—এ প্রশ্নের উত্তর নির্ভর করে সেই
সুন্নতের ধরনটির ওপর, কারণ সুন্নতেরও বিভিন্ন স্তর আছে। নিচে বিষয়টি
বিস্তারিতভাবে দেওয়া হলো:
যোহরের সুন্নত নামাজ কয় রাকাত?
চার রাকাত: যোহরের ফরজের আগে — “সুন্নতে মুয়াক্কাদা” (নিয়মিত পালনীয় সুন্নত)
দুই রাকাত: যোহরের ফরজের পরে — এটি নিয়েও মতভেদ আছে, তবে অনেক আলেম এটিকেও
সুন্নতে মুয়াক্কাদা বলেন
সুন্নতে মুয়াক্কাদা না পড়লে কি গুনাহ হয়?
হ্যাঁ, গুনাহ হতে পারে। কেননা:
১. রাসূল (সা.) নিয়মিত এই নামাজ আদায় করতেন এবং ত্যাগ করতেন না।
২. কেউ যদি ইচ্ছাকৃতভাবে, অবহেলা করে এই নামাজ না পড়ে — তাহলে আলেমদের মতে এটা
নাজায়েজ (অপ্রশংসনীয়) ও গুনাহ হতে পারে।
হাদীস প্রমাণ:
"যে ব্যক্তি ১২ রাকাত সুন্নতে মুয়াক্কাদা নিয়মিত আদায় করবে, আল্লাহ তাকে
জান্নাতে একটি ঘর বানিয়ে দেবেন।"
[সহীহ মুসলিম, হাদীস: ৭২৮]
এ ১২ রাকাতের মধ্যে যোহরের আগে ৪ রাকাত এবং পরে ২ রাকাত সুন্নত রয়েছে।
কখন গুনাহ হয়?
যদি কেউ এক-আধ দিন ভুলে না পড়ে — গুনাহ নয়।
কিন্তু কেউ যদি নিয়মিত অবহেলা করে, বা মনে করে এটা না পড়লেও কোনো সমস্যা নেই —
তবে সেটা গুনাহের পর্যায়ে পড়বে।
সংক্ষেপে:
যোহরের আগে ৪ রাকাত সুন্নত নামাজ ছাড়া উচিত নয়।
ইচ্ছাকৃতভাবে ও নিয়মিতভাবে না পড়লে গুনাহ হতে পারে।
কেউ যদি ভুলে বা ব্যস্ততার কারণে মাঝে মাঝে না পড়ে, আল্লাহ ক্ষমাশীল
পরিশেষেঃ চার রাকাত সুন্নত নামাজে সুরা পড়ার নিয়ম
জানবো আমরা ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url