পরিবেশ রসায়ন পাঠের গুরুত্ব। রসায়ন পাঠের গুরুত্ব সংক্ষেপে

পরিবেশ রসায়ন পাঠের গুরুত্ব বা রসায়ন পাঠের গুরুত্ব সংক্ষেপে আজকে আপনাদের সাথে আলোচনা করবো। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে রসায়ন পাঠের গুরুত্ব অপরিসীম। পরিবেশ রসায়ন পাঠের গুরুত্ব কতটা জানতে হলে আপনাকে জানতে হবে কি কি কাজে রসায়ন যুক্ত রয়েছে। তাহলে চলুন পরিবেশ রসায়ন পাঠের গুরুত্ব সম্পর্কে আলোচনা করা যাক।

পরিবেশ রসায়ন পাঠের গুরুত্ব। রসায়ন পাঠের গুরুত্ব সংক্ষেপে । chemistry। জানবো আমরা। janbo amra।
পরিবেশ রসায়ন পাঠের গুরুত্ব। রসায়ন পাঠের গুরুত্ব সংক্ষেপে

সূচিপত্রঃ রসায়ন পাঠের গুরুত্ব

ভূমিকাঃ 
আমাদের জীবনে রসায়নের ব্যবহার ব্যপকভাবে জড়িত। চলুন জেনে নেওয়া যাক পরিবেশ রসায়ন পাঠের গুরুত্ব।

দৈনন্দিন জীবনে রসায়নের গুরুত্ব

আশ্রয়, খাদ্য, কাপড় আমাদের এই তিনটি মৌলিক চাহিদা বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ ও ফাইবার দ্বারা তৈরি হয়। এসব রাসায়নিক পদার্থ বা ফাইবার আমরা রসায়ন থেকেই পাই।

আমরা যে খাবার খায় সেই খাবারেও রয়েছে বিভিন্ন রাসায়নিক উপাদান। এরপর কোন অসুখ বিসুখ হলে যে ওষুধ খাই সেটাও রসায়নের অংশ। আমরা রসায়নের মাধ্যমেই বিষাক্ত দ্রব্য বা বিপজ্জনক দ্রব্য চিহ্নিত করতে পারি এবং এর থেকে রক্ষা পাই।

অর্থাৎ দৈনন্দিন জীবনে আমাদের রসায়নের গুরুত্ব অতুলনীয় এবং রসায়ন পাঠের গুরুত্ব অপরিসীম। দৈনন্দিন জীবনে রসায়নের গুরুত্ব দেখলেন চিকিৎসা ক্ষেত্রে রসায়নের গুরুত্ব এবার জেনে নিন।

চিকিৎসা ক্ষেত্রে রসায়নের গুরুত্ব 

ফার্মাসিউটিক্যাল রসায়ন এবং চিকিৎসা রসায়ন, রসায়ন বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখা বিশেষ করে সাংশ্লেষিক জৈব রসায়ন ও ফার্মাকোলজি এবং অন্যান্য বিভিন্ন জৈবিক বিশেষত্বের সাথে সম্পর্কিত। ওষুধ তৈরিতে যে সকল যৌগ ব্যবহার হয় সেগুলো সবই জৈব যৌগ যা রসায়নের অংশ।

বিভিন্ন রোগ নির্ণয়ের জন্য আমাদের রক্ত পরীক্ষা, প্রস্রাব পরীক্ষা এবং শরীরের বিভিন্ন অংশের পরীক্ষা করতে হয় যেগুলো সবই একমাত্র রসায়নের মাধ্যমেই সম্ভব হয়।

এছাড়াও চেতনা নাশক হিসেবে ইথার, ক্লোরোফরম, অ্যান্টিসেপটিক হিসেবে টিংচার আয়োডিন, হেক্সাক্লোরোফিন ইত্যাদি মানুষের জীবন রক্ষায় চিকিৎসা শাস্ত্রে ব্যবহৃত হচ্ছে যা রসায়নের অনন্য আবিষ্কার।

রসায়ন পাঠ করলে তবেই আমরা এসব সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করতে পারব এজন্য চিকিৎসা ক্ষেত্রে রসায়ন পাঠের গুরুত্ব অপরিসীম। চিকিৎসা ক্ষেত্রে রসায়নের গুরুত্ব জানলেন এইবার জানুন শিল্প উন্নয়নে রসায়নের ভূমিকা।

শিল্প উন্নয়নে রসায়নের ভূমিকা 

কারখানাজাত রাসায়নিক পদার্থ উৎপাদনের কোম্পানিই হচ্ছে রাসায়নিক শিল্প।

সার কারখানা, পেপার মিল, সুগার মিল, ওষুধ শিল্প, পেট্রোলিয়াম, পারমাণবিক প্লান্ট, সিমেন্ট কারখানা, তেল উত্তোলন ও পরিশোধন, পেইন্টস কারখানা, গ্লাস ও সিরামিক শিল্প, পারমাণবিক প্লান্ট, টেক্সটাইল কোম্পানি ইত্যাদি সকল শিল্পগুলোতেই রসায়ন যুক্ত রয়েছে।

এজন্য এই শিল্পগুলোকে রাসায়নিক শিল্প বলা হয়। বিভিন্ন শিল্পের বৃদ্ধি এবং বিকাশের ক্ষেত্রে রসায়ন অত্যন্ত দরকারি এবং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

রসায়ন এর মাধ্যমে শিল্পের উন্নয়ন সম্ভব এজন্য রাসায়নিক শিল্পের উন্নয়নে রসায়ন পাঠের গুরুত্ব অনেক। শিল্প উন্নয়নে রসায়নের ভূমিকা জেনে নিলেন এইবার জানুন আমাদের জীবনে সর্বক্ষেত্রে রসায়নের উপস্থিতি রয়েছে কেন।

আমাদের জীবনে সর্বক্ষেত্রে রসায়নের উপস্থিতি রয়েছে কেন 

আমরা চোখে দেখি, বিভিন্ন খাবারে ঘ্রাণ নেই এবং খাবার খায়, আমরা সব সময় যে বাতাসে শ্বাস নেই এই সবকিছুতেই রসায়ন রয়েছে। আমাদের শরীর যা দিয়ে তৈরি সেটাও একটি রাসায়নিক উপাদান।

এমনকি আমাদের আবেগের কার্যকলাপও রাসায়নিক বিক্রিয়ার ফলেই হয়ে থাকে। এক কথায় সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর এবং রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগ পর্যন্ত যা কিছু করি সবকিছুতে রসায়ন সম্পৃক্ত রয়েছে।

সঠিকভাবে রসায়ন পাঠের মাধ্যমে আমাদের জীবনযাত্রাকে আরো উন্নত করতে পারি এই জন্য রসায়ন পাঠের গুরুত্ব মানব জীবনে অনেক মূল্যবান। আমাদের জীবনে সর্বক্ষেত্রে রসায়নের উপস্থিতি রয়েছে কেন জানলেন এবার জেনে নিন পরিশেষে রসায়ন পাঠের গুরুত্ব।

পরিশেষে রসায়ন পাঠের গুরুত্ব

আমাদের জীবনে প্রতিটা ক্ষেত্রে রসায়ন যুক্ত রয়েছে। রসায়নকে কাজে লাগিয়ে আমরা প্রতিটা ক্ষেত্রকে উন্নত করতে পারি। এজন্য রসায়ন পাঠ করা জরুরী। শুধু আমরা মানুষের উন্নতির জন্যই নয় আশেপাশের পরিবেশের উন্নয়ন বা অন্যান্য প্রাণীর জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন বা সুস্থতার জন্য হলেও রসায়ন পাঠের গুরুত্ব রয়েছে।

রসায়ন পাঠের গুরুত্ব সম্পর্কে যদি আপনাদের কোন মন্তব্য থাকে সেটি নিচের কমেন্ট বক্সে জানিয়ে দিবেন। পরিবেশ রসায়ন পাঠের গুরুত্ব বা রসায়ন পাঠের গুরুত্ব সংক্ষেপে জেনে নিলেন।

পাঠ্যবই হতে রসায়ন পাঠের গুরুত্ব (The Importance Of Studying Chemistry)

ধরুন, আপনি সকালবেলা ঘুম থেকে উঠলেন। ঘুম থেকে উঠে ব্রাশে একটু পেস্ট লাগিয়ে দাঁত মাঁজলেন। তারপর বই নিয়ে পড়তে বসলেন। পড়ার সময় মা আপনাকে চা আর বিস্কুট দিল। আপনি তা খেলেন। খেয়ে গোসল করতে গেলেন। গোসল করতে গিয়ে দেখলেন আপনাদের বাথরুমটা একটু নোংরা হয়ে আছে।

তাই আপনি টয়লেট ক্লিনার দিয়ে টয়লেট পরিষ্কার করলেন। গোসল করার সময় ব্যবহার করলেন সুগন্ধি সাবান আর শ্যাম্পু। গোসল শেষে গায়ে একটু লোশন মেখে নিলেন। তারপর সকালের নাশতা সেরে স্কুলে গেলেন। স্কুলে শিক্ষক চক দিয়ে বোর্ডে লিখে আপনাদের পড়া বুঝিয়ে দিলেন।

লক্ষ করুন, আপনি যে জিনিসগুলো ব্যবহার করেছেন যেমন-পেস্ট, ব্রাশ, বিস্কুট, টয়লেট ক্লিনার, সাবান, শ্যাম্পু, লোশন কিংবা চক সবই রসায়নের অবদান। শুধু কি তাই? জমিকে উর্বর করার জন্য তৈরি করা হয়েছে সার। ক্ষেতের ফসল যেন পোকা-মাকড়ে নষ্ট না করে তার জন্য মানুষ তৈরি করেছে কীটনাশক (insecticides)।

খাদ্যকে দীর্ঘ দিন সংরক্ষণ করার জন্য তৈরি করেছে প্রিজারভেটিভস জাতীয় রাসায়নিক পদার্থ। অর্থাৎ চাষাবাদ কিংবা খাদ্যের জন্য আমরা রসায়নের উপর নির্ভর করি। আজ কলেরা, টাইফয়েড যক্ষা ইত্যাদি যে সমস্ত রোগ মানুষের জন্য অতি সাধারণ চিকিৎসাযোগ্য রোগ, একসময় এই ধরনের রোগেই লক্ষ লক্ষ মানুষ মারা গেছে।

রসায়নের জ্ঞান ব্যবহার করে মানুষ এ সকল রোগের ওষুধ সফলতার সাথে আবিষ্কার করেছে। এখন ওষুধের আবিষ্কার এমন পর্যায়ে চলে গেছে যে ক্যান্সারের মতো মরণবাধী থেকেও মানুষ অনেক ক্ষেত্রে রক্ষা পেয়েছে। শিল্পকারখানা, যানবাহন, মানুষের ব্যবহার্য সামগ্রী থেকে প্রচুর পরিমাণে রাসায়নিক বর্জ্য আমাদের পরিবেশের ক্ষতি সাধন করছে।

এর মাঝে রয়েছে কার্বন ডাই অক্সাইড, কার্বন-মনোক্সাইড, সালফার ডাই অক্সাইড, বিভিন্ন এসিড,, বিভিন্ন ভারী ধাতু (যেমন-পারদ, লেড, আর্সেনিক, কোবাল্ট ইত্যাদি) সহ আরও অনেক ধরনের রাসায়নিক দ্রব্য। এগুলো বায়ুর সাথে মিশে বায়ু দূষণ, পানির সাথে মিশে পানি দূষণ এবং অন্যান্য উপায়ে পরিবেশের ক্ষতিসাধন করেই চলেছে।

এগুলো বিভিন্ন উদ্ভিদ বা মাছের শরীরে প্রবেশ করে তাদের ক্ষতিসাধন করছে। আবার বিভিন্ন ক্ষেত্রে অতিরিক্ত রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার করা আমাদের জন্য ক্ষতির কারণ। যেমন- ফসলের ক্ষেতে ক্ষতিকারক পোকা-মাকড় ধ্বংস করার কাজে কীটনাশক ব্যবহার করা হয়। কীটনাশক ব্যবহারের ক্ষেত্রেও রসায়ন পাঠের গুরুত্ব মূল্যবান।

কিন্তু তা প্রয়োজনের অতিরিক্ত ব্যবহার করলে ওই অতিরিক্ত কীটনাশক বৃষ্টির পানিতে ধুয়ে পুকুর, নদ নদী, খাল-বিলের পানিতে গিয়ে পড়ে যা ঐ পানিকে দূষিত করে। আবার, বাতাসের সাথে মিশে বাতাসকে দূষিত করে অর্থাৎ কীটনাশকের অতিরিক্ত ব্যবহার পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। রসায়ন পাঠ করলে এ রকম প্রকৃতি ও বাস্তব জীবনের অনেক কিছুই আপনারা ব্যাখ্যা করতে পারবেন।

তাহলে বুঝতে পারলেন রসায়ন একদিকে যেমন অনেক প্রয়োজনীয় ও মূল্যবান জিনিস আবিষ্কার করছে, তেমনই তার অযৌক্তিক এবং অবিবেচকের মতো ব্যবহার পরিবেশেরও মারাত্মক ক্ষতিসাধন করছে। এখনো অনেক রোগের ওষুধ আবিষ্কার হয়নি। আরও রসায়ন অধ্যয়ন ও গবেষণা করে সেসব ওষুধ আবিষ্কারের চেষ্টা করা এখন আমাদের দায়িত্ব। একজন বিজ্ঞানী বা গবেষক জানেন যে রসায়ন পাঠের গুরুত্ব কতটা।

কাজেই আপনারা নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন রসায়ন পাঠ করে একদিকে আমরা যেরকম মানবকল্যাণের জন্য প্রয়োজনীয় অনেক নতুন জিনিস তৈরি করতে পারব, একই সাথে পরিবেশের জন্য কোনটি ক্ষতিকর সেটি বুঝতে পারব। অর্থাৎ আমাদের জীবনে প্রতিটা ক্ষেত্রে রসায়ন পাঠের গুরুত্ব রয়েছে। আর আপনারা রসায়ন অধ্যয়ন করে এ পৃথিবীকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবেন। এটা আপনাদের কাছে সবার প্রত্যাশা।

পরিশেষেঃ পরিবেশ রসায়ন পাঠের গুরুত্ব। রসায়ন পাঠের গুরুত্ব সংক্ষেপে

আশাকরি পরিবেশ রসায়ন পাঠের গুরুত্ব সম্পর্কে ভালোভাবে বুঝতে পেরেছেন। এইরকম তথ্য পেতে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

জানবো আমরা ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url