বাথরুমে প্রবেশ করার দোয়া বাংলা ও আরবিতে

বাথরুমে প্রবেশ করার দোয়া বাংলা ,আরবিতে ,আদব সমুহ, প্রবেশ করার  হাদিস সমুহ ও বাথরুমে দুআ পড়া যাবে কি এ সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে  আর্টিকেলটি বিস্তারিত পড়ুন।
বাথরুমে প্রবেশ করার দোয়া বাংলা । জানবো আমরা ।
বাথরুমে প্রবেশ করার দোয়া বাংলা
বাথরুমে প্রবেশ করার দোয়া বাংলা জানার পাশাপাশি বাথরুমে প্রবেশ করার দোয়া কেন প্রয়োজন ও টয়লেটে যাওয়ার নিয়ম জানতে পারবেন। 

সূচীপত্র ঃ বাথরুমে প্রবেশ করার দোয়া বাংলা

বাথরুমে প্রবেশ করার দোয়া বাংলা

বাথরুমে প্রবেশ করার দোয়াটি বাংলায় নিচে দেওয়া হলো:

আরবি দোয়া:

اللّهُـمَّ إِنِّي أَعـوذُ بِكَ مِنَ الْخُبُثِ وَالْخَبَائِثِ

বাংলা উচ্চারণ:

আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজু বিকা মিনাল খুবছি ওয়াল খাবায়িস।

বাংলা অর্থ:

হে আল্লাহ! আমি আপনার আশ্রয় চাই অপবিত্র জিন ও শয়তান পুরুষ ও নারী থেকে। বাথরুমে প্রবেশ করার দোয়া বাংলা জানলেন এইবার আরবিতে জানু্ন। 

বাথরুমে প্রবেশ করার দোয়া আরবিতে

বাথরুমে প্রবেশ করার সময় পাঠ করার দোয়াটি আরবিতে নিচে দেওয়া হলো:

اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْخُبُثِ وَالْخَبَائِثِ

বাংলা উচ্চারণ:

আল্লাহুম্মা ইন্নি আউযু বিকা মিনাল খুবসি ওয়াল খাবায়িস।

বাংলা অর্থ: হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাই অপবিত্র শয়তান পুরুষ ও নারীদের (অর্থাৎ অপবিত্রতা ও অশুভ জিনদের) থেকে।
বাথরুমে প্রবেশ করার দোয়া আরবিতে জেনে নিলেন এখন পড়ে নিন বাথরুমে যাওয়ার আদব সমুহ। 

বাথরুমে যাওয়ার আদব সমুহ

বাথরুমে যাওয়ার আদব বা শিষ্টাচারসমূহ ইসলাম অনুযায়ী নিম্নরূপ:

১. ডান পা আগে না রাখা

বাথরুমে প্রবেশের সময় বাম পা আগে রাখবেন।

২. প্রবেশের দোয়া পড়া

বাথরুমে ঢোকার আগে এই দোয়াটি পড়বেন:

اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْخُبُثِ وَالْخَبَائِثِ

বাংলা উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নি আউযু বিকা মিনাল খুবসি ওয়াল খাবায়িস।

অর্থ: হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাই অপবিত্র জিন ও শয়তান থেকে।

৩. আড়াল হওয়া

দেহের গোপন অঙ্গ আড়াল করে রাখা।

৪. কিবলার দিকে মুখ বা পিঠ না করা

প্রস্রাব বা পায়খানার সময় কিবলার দিকে মুখ বা পিঠ না করা (যদি সম্ভব হয়)।

৫. বুক পর্যন্ত কাপড় না তোলা

যতটুকু প্রয়োজন, শুধু ততটুকুই কাপড় উঠানো।

৬. চুপ থাকা

বাথরুমে কথা বলা, সালাম দেওয়া বা জবাব দেওয়া থেকে বিরত থাকা।

৭. বাম হাত ব্যবহার করা

ইস্তিঞ্জা বা পরিষ্কার করার সময় বাম হাত ব্যবহার করবেন।

৮. ডান পা আগে বের করা

বাথরুম থেকে বের হওয়ার সময় ডান পা আগে বের করবেন।

৯. বের হওয়ার দোয়া পড়া

غُفْرَانَكَ

বাংলা উচ্চারণ: গুফরানাকা

অর্থ: হে আল্লাহ! আমি আপনার ক্ষমা প্রার্থনা করছি।

বাথরুমে প্রবেশ করার দোয়া কেন প্রয়োজন

বাথরুমে প্রবেশের সময় দোয়া পড়া প্রয়োজনীয়, কারণ এতে রয়েছে:

১. শয়তানের অনিষ্ট থেকে রক্ষা পাওয়া

বাথরুম এমন এক স্থান যেখানে অশুভ জিন ও শয়তানরা অবস্থান করতে পারে। তাই দোয়ার মাধ্যমে আমরা আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাই, যেন তারা আমাদের ক্ষতি করতে না পারে।

২. ইসলামের আদর্শ অনুযায়ী জীবন যাপন

রাসূলুল্লাহ (সা.) জীবনের প্রতিটি কাজে আল্লাহর স্মরণ করতেন। দোয়া পড়া আমাদেরকে সে আদর্শ অনুসরণে সহায়তা করে।

৩. পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও আত্মিক নিরাপত্তা

বাথরুমে প্রবেশের আগে দোয়া পড়া আমাদের শারীরিক ও আত্মিকভাবে পরিচ্ছন্ন থাকতে সাহায্য করে।

৪. সুন্নাহ পালন করা

এই দোয়াটি পড়া রাসূল (সা.)-এর সুন্নাহ। সুন্নাহ পালনের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জিত হয়। বাথরুমে প্রবেশ করার দোয়া কেন প্রয়োজন জেনে নিলেন টয়লেটে যাওয়ার নিয়মকানুন জেনে নিন চলুন। 

টয়লেটে যাওয়ার নিয়ম

ইসলামে টয়লেটে যাওয়ার কিছু গুরুত্বপূর্ণ নিয়ম বা শিষ্টাচার রয়েছে, যা পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা, সম্মান এবং ধর্মীয় আদর্শ বজায় রাখতে সাহায্য করে। নিচে নিয়মগুলো ধাপে ধাপে দেওয়া হলো:

১. টয়লেটে ঢোকার আগে দোয়া পড়া

اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْخُبُثِ وَالْخَبَائِثِ

উচ্চারণ (বাংলা): আল্লাহুম্মা ইন্নি আউযু বিকা মিনাল খুবসি ওয়াল খাবায়িস।

অর্থ: হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাই অপবিত্র জিন ও শয়তান থেকে।

২. বাম পা দিয়ে প্রবেশ করা

টয়লেটে প্রবেশের সময় বাম পা আগে রাখবেন।

৩. একাকী ও আড়ালে থাকা

নিজেকে আড়ালে রেখে কাজ সম্পন্ন করা উত্তম। সম্ভব হলে নির্জন বা বন্ধ দরজা ব্যবহার করুন।

৪. কথা না বলা ও আল্লাহর নাম না নেওয়া

টয়লেটের ভেতরে কোনো কথা বলা, সালাম দেয়া, কিংবা আল্লাহর নাম উচ্চারণ করা উচিত নয়।

৫. কিবলার দিকে মুখ বা পিঠ না করা

প্রস্রাব বা পায়খানার সময় সম্ভব হলে কিবলার দিকে মুখ বা পিঠ না করার চেষ্টা করবেন।

৬. বাম হাতে ইস্তিঞ্জা করা

শরীর পরিষ্কারের সময় বাম হাত ব্যবহার করবেন। এটি সুন্নাহ।

৭. পানির সাহায্যে ভালোভাবে পরিষ্কার করা

ইস্তিঞ্জা করার সময় ভালোভাবে পানি ব্যবহার করে সম্পূর্ণ পরিষ্কার হতে হবে।

৮. ডান পা দিয়ে টয়লেট থেকে বের হওয়া

টয়লেট থেকে বের হওয়ার সময় ডান পা আগে বের করবেন।

৯. বের হয়ে দোয়া পড়া

غُفْرَانَكَ

উচ্চারণ: গুফরানাকা

অর্থ: হে আল্লাহ! আমি আপনার ক্ষমা চাই।

এই নিয়মগুলো মানলে শরীর ও আত্মা উভয়ই পবিত্র থাকে এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জিত হয়।

বাথরুমে প্রবেশ করার দোয়া হাদিস

বাথরুমে প্রবেশ করার দোয়ার হাদীসটি সহীহ হাদীসে পাওয়া যায়।

হাদীস:

عَنْ أَنَسٍ رضي الله عنه قَالَ:

كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا دَخَلَ الْخَلَاءَ قَالَ:

"اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْخُبُثِ وَالْخَبَائِثِ"

হাদীসের অনুবাদ (বাংলা):

আনাস (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত:

নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন টয়লেটে প্রবেশ করতেন, তখন এই দোয়াটি পড়তেন:

“আল্লাহুম্মা ইন্নি আউযু বিকা মিনাল খুবসি ওয়াল খাবায়িস।”

রেফারেন্স:

সহীহ বুখারী, হাদীস নম্বর: ১৪২

সহীহ মুসলিম, হাদীস নম্বর: ৩৭৫

এই হাদীস থেকে স্পষ্টভাবে বোঝা যায়, বাথরুমে ঢোকার আগে দোয়া পড়া রাসূল (সা.)-এর সুন্নাহ এবং তা আমাদের জন্য আদর্শ। বাথরুমে প্রবেশ করার দোয়া হাদিস পড়লেন এইবার বাথরুমে প্রবেশ করার ইসলামি দিক গুলো জানুন। 

ইসলামে বাথরুমে কিভাবে প্রবেশ করা যায়

ইসলামে বাথরুমে প্রবেশের নির্দিষ্ট কিছু আদব (শিষ্টাচার) বা নিয়ম আছে, যেগুলো রাসূলুল্লাহ (সা.) আমাদের শিক্ষা দিয়েছেন। নিচে ধাপে ধাপে ইসলামে বাথরুমে কিভাবে প্রবেশ করতে হয়, তা তুলে ধরা হলো:

১. দোয়া পড়া (প্রবেশের আগে):

اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْخُبُثِ وَالْخَبَائِثِ

বাংলা উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নি আউযু বিকা মিনাল খুবসি ওয়াল খাবায়িস।

অর্থ: হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাই অপবিত্র জিন ও শয়তান থেকে।

২. বাম পা আগে দিয়ে প্রবেশ করা

রাসূল (সা.) বাম পা দিয়ে বাথরুমে প্রবেশ করতেন। এটা সুন্নাহ ও সম্মান দেখানোর একটি উপায়।

৩. কথা না বলা

বাথরুমে কথা বলা, সালাম দেওয়া, জবাব দেওয়া বা কোরআন-হাদীসের কোনো অংশ পড়া নিষেধ। আল্লাহর নামও সেখানে উচ্চারণ করা উচিত নয়।

৪. একাকী ও আড়ালে থাকা

গোপন অঙ্গ ঢেকে রাখা এবং একা থাকা শালীনতার অংশ।

৫. কিবলার দিকে মুখ বা পিঠ না করা (যদি সম্ভব হয়)

বাথরুমে বসার সময় কিবলার দিকে মুখ বা পিঠ না করার চেষ্টা করতে হবে, বিশেষ করে খোলা স্থানে।

এগুলো অনুসরণ করলে ইসলামী শিষ্টাচার রক্ষা হয় এবং শয়তান থেকে নিরাপদ থাকা যায়।
ইসলামে বাথরুমে কিভাবে প্রবেশ করা যায় জানালাম এখন বাথরুমে দুআ পড়া যাবে কিনা তা জেনে নিন। 

বাথরুমে দুআ পড়া যাবে কি

না, ইসলামী আদব অনুযায়ী বাথরুমের ভিতরে দোয়া পড়া যাবে না, বিশেষ করে যেসব দোয়ায় আল্লাহর নাম বা যিকির আছে। কারণ:

১. বাথরুম অশুদ্ধ স্থান

বাথরুম পবিত্র স্থান নয়। সেখানে আল্লাহর নাম উচ্চারণ করা ইসলামি আদবের পরিপন্থী।

২. হাদীসের নির্দেশনা

রাসূল (সা.) বাথরুমে ঢোকার আগে দোয়া পড়তেন, ভিতরে ঢোকার পরে নয়।

সুতরাং দোয়াটি পড়তে হবে বাথরুমে প্রবেশ করার ঠিক আগমুহূর্তে, বাইরের অবস্থায়।

৩. আদব রক্ষা করা জরুরি

বাথরুমে ঢোকার পর দোয়া, যিকির বা কুরআন পাঠ না করে চুপ থাকা উত্তম এবং সুন্নাহর অংশ। দোয়া পড়তে হবে বাথরুমে ঢোকার আগে, ভিতরে পড়া যাবে না।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

জানবো আমরা ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url