টি-শার্ট প্রিন্ট ব্যবসা শুরুর জন্য যা করতে হবে নতুনদের জন্য

টি-শার্ট প্রিন্ট ব্যবসা শুরুর জন্য যা করতে হবে নতুনদের জন্য সেইসব বিষয় নিয়েই বিস্তারিত আলোচনা করবো আজকে আপনাদের সাথে। আপনি কাপড় কিনবেন নাকি রেডিমেট নিবেন, এছাড়াও যাবতীয় কাজগুলো কোথায় থেকে করবেন সবকিছুই জানতে পারবেন।
টি-শার্ট প্রিন্ট ব্যবসা শুরুর জন্য যা করতে হবে নতুনদের জন্য। জানবো আমরা। janbo amra
টি-শার্ট প্রিন্ট ব্যবসা শুরুর জন্য যা করতে হবে নতুনদের জন্য

সূচিপত্রঃ টি-শার্ট প্রিন্ট ব্যবসা শুরুর জন্য যা করতে হবে নতুনদের জন্য

ভূমিকাঃ
আপনারা অনেকেই টি-শার্ট প্রিন্ট ব্যবসা শুরু করতে চাচ্ছেন কিন্তু সঠিক পদক্ষেপ নিতে পারছেন না। এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনাদের টি-শার্ট প্রিন্ট ব্যবসার সকল তথ্য বিস্তারিত জানাবো। তাহলে চলুন জানা যাক টি-শার্ট প্রিন্ট ব্যবসা শুরুর জন্য যা যা করতে হবে আপনাকে।

টি-শার্ট প্রিন্ট ব্যবসা শুরুর জন্য যা করতে হবে নতুনদের জন্য

টি শার্ট প্রিন্ট ব্যবসা যখন শুরু করবেন তখন আপনি যদি কারো মাধ্যমে বা কাউকে শেয়ার নিয়ে এই কাজটি শুরু করতে চান সে ক্ষেত্রে আপনারা দুজন দুই ভাগে কাজটা কে ভাগ করে নেবেন তাহলে আপনাদের কাজ করতে সুবিধা হবে।

এবং আপনি যখন টি-শার্ট প্রিন্ট ব্যবসাটি শুরু করবেন তার আগে সকল পরিকল্পনা সঠিকভাবে করে নিয়ে কাজটি শুরু করবেন তাহলে কোন ভুল হবে না পরিকল্পনা অনুযায়ী আপনি এগিয়ে যেতে পারবেন সামনের দিকে।

অনেক বাধা-বিপত্তি আসতে পারে সে ক্ষেত্রে হার মানা যাবে না শক্ত হাতে ধরে রাখতে হবে তাহলে আপনি ব্যবসায়ী এগিয়ে যেতে পারবেন। টি শার্ট প্রিন্ট ব্যবসা শুরু করার জন্য কিছু ধাপ রয়েছে সেগুলো সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হলো।

টার্গেট ফিক্সড করে নিন

আপনি যাদের কাছে টি-শার্ট টি বিক্রি করবেন এবং আপনার থেকে যারা টি-শার্টটি কিনে নিবে তাদের একটি  তালিকা তৈরি করে নিন প্রথমে । 

আগে জেনে নেওয়া ভালো কারণ সবাই তো আর সব ধরনের টি শার্ট পরেনা। আবার আপনি যখন টি-শার্টটি তৈরি করবেন কত পিস তৈরি করবেন সে ধারণাটিও ভালোভাবে নিয়ে নিবেন এতে করে আপনার ব্যবসায়ী কোন লস আসবেনা। 

ভালো কিছু ডিজাইন বানানো

টি-শার্টটির ডিজাইন এবং আকর্ষণীয় করে তুলুন কারণ সবাই টি-শার্টের ডিজাইন এবং আকর্ষণতা দেখে কিনে। এজন্য ডিজাইনকে আগে বেশি ফলো করে নিন।

ডাইং ফ্যাক্টরি যোগাড় করা

টি-শার্টের ব্যবসা শুরু করার আগে আপনাকে প্রথমেই ডাইং ফ্যাক্টরির জোগাড় করার দিক টাকে সর্বপ্রথম লক্ষ্য দিতে হবে। এতে করে আপনার যদি বেশি টাকাও লেগে থাকে সে ক্ষেত্রে বেশি টাকা দিয়ে হলেও একটা ডাইং ফ্যাক্টরি সাথে আপনার কন্টাক্ট করে নিতে হবে সর্বপ্রথম।

গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি জোগাড় করা

টি-শার্ট ব্যবসার ক্ষেত্রে আপনাকে প্রথমে একটি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি জোগাড় করে নিতে হবে সে ক্ষেত্রে আপনার টি-শার্ট বিক্রয় করার ক্ষেত্রে অনেক কাজে দেবে।

কারণ অনেক সময় দেখা যায় অনেক গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি আপনার টি-শার্টটি নিতে চায় না সে ক্ষেত্রে আপনার ব্যবসায়ী লস করে যায় এজন্য আপনাকে সর্বপ্রথম একটা গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিকে জোগাড় করে নিয়ে ঠিক করে রাখতে হবে যাতে আপনার টি শার্ট তৈরি করার ক্ষেত্রে সেগুলো যেন নষ্ট না হয় এবং আপনি যেন ভালভাবে সেগুলো বিক্রি করতে পারেন।

কাপড় কেনা

টি-শার্ট ব্যবসা শুরু করার আগে আপনি যখন টি-শার্টের কাপড়টি কিনবেন তখন টি-শার্টে কাপড়- কুনমানের কিনবেন সেই দিকে আপনাকে খেয়াল রেখে কাপড়টিকে কিনতে হবে এবং ভালো মানের কাপড় কেনারই চেষ্টা করতে হবে।

যাতে আপনি যখন পরবর্তীতে টি-শার্টটি বিক্রি করবেন তখন যেন আপনার কাস্টমার আপনার টি-শার্টকেই বেশি পছন্দ করে এবং লক্ষ্য রাখে। কাপড় সাধারণত কাপড়ের ঘনত্বের উপর নির্ভর করে থাকে।

গরমের জন্য কোন মানের কাপড় কিনবেন এবং শীতের জন্য কোন মানের কাপড় কিনবেন সেদিকে আপনাকে লক্ষ্য রেখে কাপড় কিনতে হবে। সাধারণত গরমের জন্য ১৬০ এর উপরে জি এস এম এর কাপড় সবার চোখে অনেক ভালো।

আবার ১৮০ কে ও প্রাধান্য দেওয়া হয়ে থাকে। শীতের পোশাকের ক্ষেত্রে ২০০ জি এস এম নিতে হবে। ভুলেও আপনি ইনটেক্ট করা কাপড় কিনবেন না এতে করে আপনার কাপড়ের মান খারাপ হবে এবং রং উঠবে এতে করে আপনার কাস্টমারেরা আর আপনার কাছে টি শার্ট কিনবে না।

এজন্য আপনাকে টি-শার্ট ব্যবসা শুরু করার আগে কোন কাপড় ভালো এগুলোর দিকে ও লক্ষ্য রেখে ব্যবসায়ের কাপড় কিনতে হবে এবং টি শার্ট তৈরি করতে হবে।

কি কি সাইজের টি-শার্ট বানাবেন তার ধারণা

সবার সাইজ কিন্তু এক হয় না এজন্য টি-শার্ট ব্যবসার ক্ষেত্রে সব ধরনের সাইজেরি বানায় রাখতে হয়।কেউ মোটা কেউ খাটো কেউ লম্বা কেউ ছোট ইত্যাদি সবার জন্যই সাইজ করে বানায় রাখতে হবে।

এজন্য আপনি সাইজ হিসাব করতে পারেন এভাবে s,M, L,XL,XXLএভাবে আপনি একেকজনের একেক সাইজ অনুযায়ী টি-শার্ট বানায়ে রাখতে পারেন।

এজন্য টি-শার্টের ব্যবসা করার আগে কোন সাইজের টি শার্ট বানাবেন এইদিকে গুরুত্ব দিয়ে টি-শার্ট তৈরি করতে হবে আপনাকে। তাহলে আপনার কাছে যে সাইজের লোক এসে যে সাইজ চাইবে সে সাইজ অনুযায়ী আপনি আপনার টি-শার্টটি বের করে দিতে পারবেন।

কাপড় কাটানো

এরপর আপনাকে গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি আপনাকে কাপড় মেজারমেন্ট অনুযায়ী কেটে দেবে তারপর আপনি তা প্রিন্ট করাবেন। আর এই কাপড় আপনি প্রিন্ট করানোর জন্য প্রিন্ট ফ্যাক্টরিতে পাঠাবেন।

প্রিন্টিং এর জন্য পাঠানো

তারপর আপনি আপনার কাপড় গুলোকে প্রিন্টিং এর জন্য পাঠানোর পর আপনি কোন প্রিন্ট নিবেন কি কালার নিবেন সবকিছু ভালোভাবে দেখায় দিবেন প্রিন্টার কে সে অনুযায়ী আপনার টি-শার্টটিকে তারা প্রিন্ট করে দিবে।

তারপর প্রিন্টার কি আপনি সবকিছু বুঝিয়ে দিবেন এবং বলবেন কতগুলো টি-শার্ট প্রিন্ট করতে হবে। তা অনুযায়ী তারা আপনাকে প্রিন্ট করে সব পাঠায় দিবে।

প্রিন্ট করানো

প্রিন্ট করানোর সময় আপনি দরকার হলে নিজে দাঁড়ায় থেকে প্রিন্ট করাই নিবেন আর না হলে তারা আপনাকে যেদিন সময় দিবে সেদিন আপনি প্রিন্ট করাই নিবেন।

এভাবে প্রিন্ট করায়ে নিলে আপনি আপনার ডিজাইন অনুযায়ী প্রিন্ট করায় নিতে পারবেন এবং কোন ক্ষতি হবে না। প্রতিটি টি-শার্ট প্রিন্ট করা হয়ে গেলে একটা একটা করে চেক করে নেবেন যাতে কোন অবঞ্চিত দাগ না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখবেন।

কাপড় আইরন

প্রিন্ট শেষে সবগুলো কাপড় আপনি আয়রন করে নিন। কাপড় আয়রনের মাধ্যমে দেখা যাবে আপনের কাপড়ের কোন ভাজ থাকবে না। এজন্য কাপড় টাকে ভালোভাবে আয়রন করে নিতে হবে যাতে কোন কুচকানো ভাব না থাকে।

আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে ভালোভাবে যাতে আয়রন করে এক্ষেত্রে যেন পাঁচ থেকে দশটা একসাথে আয়রন না হয় তাহলে আয়রন কিন্তু ভাল হয় না তাই এইদিকেও আপনাকে লক্ষ্য রেখে কাজ করে নিতে হবে।

পলি প্যাক করানো

পলি প্যাক করানোর ক্ষেত্রেও অনেকটা লক্ষ্য দিতে হয় কারণ মুড়োক করন প্রতিও একটা আকর্ষণতা মানুষের কাজ করে থাকে।এজন্য স্ট্যান্ডার্ড সাইজের পলিব্যাগ ব্যবহার করতে হবে যাতে করে দেখতে সুন্দর লাগে। 

কারটম করানো

ভালো এবং পোক্ত শক্ত মানের কারটন ব্যবহার করতে হবে। যাতে করে কোনভাবে নষ্ট না হয়। যাতে করে পলি করা টি শার্টগুলো কার্টুনের ভেতর ভালো হবে সংরক্ষণ করা যায়। 

পরিবহন

সহজে উঠানো এবং নামানো যায় এমন পরিবহন ব্যবহার করতে হবে। আপনি যদি কোথাও পাঠাতে চান সেক্ষেত্রে কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে পাঠাতে পারেন। তবে আপনার খরচ যত কম হবে সেই দিকে আপনি লক্ষ্য রেখে এই পরিবহন ঠিক করবেন। 

বিক্রয় শুরু

বিক্রয়ের ক্ষেত্রে আপনি আপনার লাভ রেখে কাস্টমারের কাছে বিক্রয় করবেন যাতে আপনার লস না হয়। সেই অনুযায়ী আপনি আপনার টি-শার্টটি বিক্রয় করবেন।

আপনার কত খরচ পড়েছে টি-শার্টটি তৈরি করতে সকল খরচ হিসাব করে আপনার যেটুকু লাভ হবে সে অনুযায়ী আপনি আপনার ক্রেতার কাছে টি-শার্টটি বিক্রয় করবেন সেদিকে অবশ্যই আপনি লক্ষ্য রাখবেন। এবং এটাই হলো আপনার সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ কাজ।

স্টকে বানানো টি শার্ট কিনে তা প্রিন্ট করার ব্যবস্থার ক্ষেত্রে যা করবেন তা হলো

বানানো এক রঙে টি শার্ট অল্প দামে কিনে আপনি যদি তা ভালো মানে সুন্দর করে আকর্ষণীয় করে প্রিন্ট করে নেয়া হয় তাহলে আপনার লাভ হয়ে থাকবে ব্যবসার ক্ষেত্রে। এভাবে অল্প টাকায় অনেক লাভ করা যায়।

এভাবে আপনি এক রঙের টি শার্ট অনেক পাবেন কম দামে তারপর তা কিনে প্রিন্ট করে আয়রন করে প্যাকিং করলেই তার দাম বেড়ে যাবে এতে আপনার ব্যবসার ক্ষেত্রে লাভ হবে।

এতে করে আপনার সুবিধা এই হবে যে আপনি সহজেই প্রাপ্য পণ্য পেয়ে যাবেন, কম সময়ে পণ্যটি তৈরি করতে পারবেন এবং দাম কম হওয়াতে অনেক টি-শার্ট কিনতে পারবেন।

অনেক সময় অসুবিধা হতে পারে এ ক্ষেত্রে কাপড়ের মান ভালো হয় না কিন্তু আপনাকে ওই দিকের লক্ষ্য রেখে কাপড়টি কিনতে হবে যাতে কাপড়টি ভালো হয়। এজন্য আপনি যদি ভালো মানের কাপড় পান সেক্ষেত্রে কাপড়টি কিনবেন না হলে কাপড় কিনবেন না এতে আপনার ব্যবসায় লস হবে কাস্টমার আর আপনার কাপড় কিনবে না।

টি-শার্ট প্রিন্ট করে অনলাইনে নিজের ব্যবসা

ডিজিটাল যুগে এখন মানুষ ঘরে বসেই কেনাকাটা করে থাকে এক্ষেত্রে মানুষ মোবাইলের মাধ্যমে বিভিন্ন রকমের জিনিসপত্র কিনে থাকে। তাই আপনি যদি অনলাইনের মাধ্যমে বিজনেস শুরু করেন তাহলে আপনি এই টি-শার্ট প্রিন্ট করে অনলাইনের মাধ্যমে ও বিক্রি করতে পারবেন।

বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়াতে আপনার ব্র্যান্ডের নামে অ্যাকাউন্ট খুলে আপনার প্রচার-প্রচারণা শুরু করতে পারবেন। প্রথমে ব্যবসা সেরকম ভালো না চললেও দেখবেন যখন আপনার প্রচার বেশি হয়ে যাবে তখন আপনার ব্যবসা কিন্তু খুব ভালোই চলবে।

এজন্য ধৈর্য ধরতে হবে। এই টি শার্ট শার্ট ব্যবসা অনলাইনের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে থাকে। পরিশেষে বলা যায় যে ভালো মেনের কাপড় কিনে এনে প্রিন্টিং করে আপনি নিজেই সব কাজগুলো যদি সম্পূর্ণ করে থাকেন সেক্ষেত্রে আপনার বেশি লাভ হবে।

এক্ষেত্রে আপনি শুরু থেকেই কাস্টমার ধরে রাখতে পারবেন। আর টি সার্ট ব্যবসা শুরু করার জন্য এগুলোই ধাপ ভালোভাবে গুরুত্বসহকারে মেনে চলতে হবে তাহলে আপনি ব্যবসার ক্ষেত্রে লাভবান হয়ে উঠতে পারবেন।

পরিশেষে: "টি-শার্ট প্রিন্ট ব্যবসা শুরুর জন্য যা করতে হবে" সম্পর্কে লেখকের মন্তব্য 

আমার মতে নিজে ভালোমানের কাপড় কিনে এনে প্রিন্টিং ও বাকি কাজ গুলো করিয়ে নেওয়া সব থেকে ভালো হবে। এক্ষেত্রে টি-শার্ট প্রিন্ট ব্যবসা শুরুর প্রথম থেকেই ভালোমতো কাস্টোমার ধরতে পারবেন।

" টি-শার্ট প্রিন্ট ব্যবসা শুরুর জন্য যা করতে হবে নতুনদের জন্য" এই আর্টিকেল টি পড়ে আপনার কোন মন্তব্য থাকলে নিচের কমেন্ট বক্সে লিখতে পাড়েন। এইরকম তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করুন। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

জানবো আমরা ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url