সুবহানাল্লাহ আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহু আকবার অর্থ ও সুবহানাল্লাহ সঠিক বানান জানুন ।

সুবহানাল্লাহ আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহু আকবার অর্থ কি জানার জন্য আর্টিকেলটি বিস্তারিত পড়ুন। 

সুবহানাল্লাহ আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহু আকবার অর্থ । জানবো আমরা । janbo amra |
সুবহানাল্লাহ আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহু আকবার অর্থ 

সুবহানাল্লাহ আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহু আকবার অর্থ ও সুবহানাল্লাহ সঠিক বানান বাংলা অর্থ ও আরবি অনুবাদও জানাবো আপনাদের। এছাড়াও কোরআনের কোথায় আছে তাও জানাবো চলুন।

সূচীপত্র ঃ সুবহানাল্লাহ আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহু আকবার অর্থ ও সুবহানাল্লাহ সঠিক বানান

সুবহানাল্লাহ আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহু আকবার অর্থ

১. সুবহানাল্লাহ (سُبْحَانَ ٱللَّٰهِ)

উচ্চারণ: সুব-হা-নাল্লাহ


অর্থ: আল্লাহ পবিত্র বা দোষমুক্ত।


২. আলহামদুলিল্লাহ (ٱلْـحَـمْـدُ للهِ)

উচ্চারণ: আল-হাম-দু-লিল্লাহ

অর্থ: সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য।

৩.আল্লাহু আকবার (ٱللَّٰهُ أَكْبَرُ)

উচ্চারণ: আল্লাহু আকবার

অর্থ: আল্লাহ সর্বশ্রেষ্ঠ বা সবচেয়ে বড়।

সুবহানাল্লাহ সঠিক বানান


"সুবহানাল্লাহ" শব্দটির সঠিক আরবি বানান হলো:

سُبْحَانَ اللَّهِ

বাংলা উচ্চারণ অনুযায়ী এটি লেখা হয়: সুবহানাল্লাহ

আর শব্দটির শুদ্ধ বাংলা অনুবাদ: আল্লাহ পবিত্র বা আল্লাহ সকল দোষ থেকে মুক্ত।

সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি অর্থ

"سُبْحَانَ اللّٰهِ وَبِحَمْدِهِ"

উচ্চারণ: সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি

বাংলা অর্থ: আল্লাহ পবিত্র, এবং আমি তাঁর প্রশংসা করছি।

অথবা, আল্লাহ ত্রুটিমুক্ত এবং তাঁরই প্রশংসা।

এই যিকিরটি হাদিসে খুবই ফজিলতপূর্ণ হিসেবে বর্ণিত হয়েছে। যেমন এক হাদিসে রাসূল (সা.) বলেছেন:

 “যে ব্যক্তি দিনে একশবার ‘সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি’ বলবে, তার গোনাহ মাফ করে দেওয়া হবে— যদি তা সমুদ্রের ফেনার মত হয়।”

— [সহীহ বুখারী ও মুসলিম]

সুবহানাল্লাহ কখন বলতে হয়

"সুবহানাল্লাহ" বলা হয় আল্লাহর পবিত্রতা, মহত্ত্ব এবং ত্রুটিমুক্ত সত্তাকে স্মরণ ও স্বীকার করার জন্য। এটি বিভিন্ন সময় ও অবস্থায় বলা যায়। নিচে কিছু গুরুত্বপূর্ণ সময় দেওয়া হলো যখন "সুবহানাল্লাহ" বলা উত্তম:

১. তাসবিহ হিসেবে যিকিরে:

নামাজ শেষে (৩৩ বার বলা হয়)।

সকালে ও সন্ধ্যায় যিকিরে।

নফল যিকির হিসেবে যেকোনো সময়।

২. আশ্চর্য, বিস্ময় বা প্রশংসা প্রকাশে:

কোনো সুন্দর কিছু দেখলে বা শুনলে।

আল্লাহর কোনো নিদর্শন বা করুণার প্রকাশ দেখলে।

৩. গুনাহ থেকে বাঁচার প্রার্থনায়:

নিজের ভুল বুঝতে পারলে বা কোনো অনুচিত কথা/কাজ হয়ে গেলে।

৪. হাদিস অনুযায়ী ফজিলত অর্জনের উদ্দেশ্যে:

রাসূল (সা.) বলেছেন, “দুনিয়া ও তাতে যা কিছু আছে তার চেয়েও প্রিয় বাক্য হলো: সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আল্লাহু আকবার।” (সহীহ মুসলিম)

সুবহানাল্লাহ শব্দের বাংলা অর্থ কি

"সুবহানাল্লাহ" (سُبْحَانَ اللَّهِ) শব্দটির বাংলা অর্থ হলো:

 “আল্লাহ পবিত্র”

অথবা

“আল্লাহ ত্রুটিমুক্ত ও সকল দোষ থেকে মুক্ত”


এই শব্দের মাধ্যমে একজন মুমিন আল্লাহর মহত্ব, পবিত্রতা ও অতুলনীয় সত্তাকে স্বীকার করেন। এটি একটি গুরত্বপূর্ণ তাসবিহ বা যিকির, যা ঈমানদাররা আল্লাহর প্রশংসায় উচ্চারণ করে থাকেন।

সুবহানাল্লাহ শব্দের তাৎপর্য

“সুবহানাল্লাহ” শব্দটির তাৎপর্য অনেক গভীর ও ঈমানদীপ্ত। এটি শুধু একটি প্রশংসাবাক্য নয়, বরং এতে রয়েছে আল্লাহর প্রতি একান্ত শ্রদ্ধা, মহিমা ও তাঁর পবিত্র সত্তার স্বীকৃতি।

“সুবহানাল্লাহ” শব্দের মূল তাৎপর্য:

1. আল্লাহ পবিত্র ও ত্রুটিমুক্ত:

এটি দ্বারা বোঝানো হয়—আল্লাহ কোনো ধরনের দোষ, দুর্বলতা, ঘাটতি, ক্লান্তি বা মানবীয় বৈশিষ্ট্য থেকে একেবারে মুক্ত।


2. আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্বের স্বীকৃতি:

মানুষ যখন কোনো বিস্ময়কর বিষয় দেখে বা আল্লাহর সৃষ্টির নিদর্শন দেখে “সুবহানাল্লাহ” বলে, তখন সে আল্লাহর অপার কুদরতকে স্বীকার করে নেয়।


3. আল্লাহকে মানবীয় গুণ থেকে মুক্ত ঘোষণা করা:

যেমন—ঘুম, ভুল, ক্লান্তি, সীমাবদ্ধতা—এসব কিছুই আল্লাহর নেই; সুবহানাল্লাহ বলার মাধ্যমে তা স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়।


4. একটি পরিপূর্ণ ইবাদত:

এটি এমন এক যিকির যা একাই আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য যথেষ্ট হতে পারে। রাসূল (সা.) বলেছেন,

 “সুবহানাল্লাহ ওয়া বিহামদিহি” বললে তা গুনাহ মাফের কারণ হয়—even যদি তা সমুদ্রের ফেনার মতো হয়। (সহীহ বুখারী ও মুসলিম)

সুবহানাল্লাহ পাঠের ফজিলত

“সুবহানাল্লাহ” পাঠের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ফজিলত রয়েছে, যা কোরআন ও সহীহ হাদীসে উল্লেখ আছে। নিচে এর কিছু উল্লেখযোগ্য ফজিলত দেওয়া হলো:

১. গোনাহ মাফের উপায়

হাদিস:

রাসূল (সা.) বলেন:

 "যে ব্যক্তি দিনে একশবার 'সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি' বলবে, তার গোনাহসমূহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে যদি তা সমুদ্রের ফেনার মত হয়।"

 (সহীহ বুখারী, হাদিস 6405)


২. জান্নাতে গাছ রোপণ হয়


হাদিস:

রাসূল (সা.) বলেছেন:


 "সুবহানাল্লাহ" বললে জান্নাতে একটি খেজুর গাছ রোপণ করা হয়।

 (তিরমিযি, হাদিস 3464)


৩. তাসবিহ পাঠ দুনিয়া ও তাতে যা কিছু আছে তার চেয়েও উত্তম

হাদিস:

 "সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আল্লাহু আকবার" — এই চারটি বাক্য আমার কাছে দুনিয়া ও তার মধ্যে যা কিছু আছে তার চেয়েও প্রিয়।

 (সহীহ মুসলিম, হাদিস 2695)

৪. পাপমুক্ত হৃদয়ের নিদর্শন

নিয়মিত “সুবহানাল্লাহ” বলার মাধ্যমে অন্তর পরিশুদ্ধ হয়, ঈমান বৃদ্ধি পায় এবং পাপ থেকে দূরে থাকার শক্তি অর্জিত হয়।

সুবহানাল্লাহ আরবি

"সুবহানাল্লাহ" এর আরবি হলো:

> سُبْحَانَ اللَّهِ

উচ্চারণ:

সুব-হা-নাল-লা-হি

অর্থ:

আল্লাহ পবিত্র / আল্লাহ সকল দোষ থেকে মুক্ত

সুবহানাল্লাহ কেন বলবেন

“সুবহানাল্লাহ” বলার পেছনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কারণ ও উদ্দেশ্য রয়েছে। এটি শুধু একটি যিকির নয়—বরং আল্লাহর পবিত্রতা ও শ্রেষ্ঠত্ব স্বীকার করার একটি শক্তিশালী উপায়। নিচে এর কারণগুলো তুলে ধরা হলো:

১. আল্লাহর পবিত্রতা ঘোষণা করার জন্য

“সুবহানাল্লাহ” মানে আল্লাহ ত্রুটিমুক্ত ও সকল দোষ থেকে মুক্ত। আমরা যখন এটি বলি, তখন আল্লাহর মহান ও নির্ভুল সত্তাকে স্বীকার করি।

২. পাপ মোচনের জন্য

হাদিসে এসেছে:
"যে ব্যক্তি দিনে ১০০ বার 'সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি' বলবে, তার গোনাহসমূহ মাফ করে দেওয়া হবেn যদি তা সমুদ্রের ফেনার মতো হয়।"

 (সহীহ বুখারী)

৩. জান্নাতে গাছ রোপণের জন্য
 প্রতিবার “সুবহানাল্লাহ” বললে জান্নাতে একটি খেজুরগাছ রোপণ হয়।

 (তিরমিযি)


৪. আল্লাহর প্রশংসা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশের জন্য

সৃষ্টিজগতের সৌন্দর্য, রহমত, নেয়ামত দেখলে “সুবহানাল্লাহ” বলা — এটি আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতার প্রকাশ।

৫. অন্তর পরিশুদ্ধ করার জন্য

নিয়মিত যিকির, বিশেষ করে “সুবহানাল্লাহ” বলার মাধ্যমে অন্তর নরম হয়, পাপ থেকে দূরে থাকা সহজ হয় এবং ইমান বৃদ্ধি পায়।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

জানবো আমরা ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url